ন্যাশনাল হেরাল্ড দুর্নীতি মামলায় সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের ঘটনায় উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতি। এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদির স্বৈরশাসন কায়েমের চেষ্টার বিরুদ্ধে স্লোগানে মুখর ছিল নয়াদিল্লির রাজপথ। কংগ্রেস নেতাকর্মীদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলার মাধ্যমে পার্লামেন্টকে বিরোধীদল শূন্যের চেষ্টায় লিপ্ত বিজেপি। এসময় আটক করা হয় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে।
কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট বলেন, ‘আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। আপনারা জানেন, এই মামলায় এক রুপি লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীকে নিশানা বানানো হচ্ছে।’
আর্থিক বিষয়ক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডির অভিযোগপত্রে অভিযুক্তের তালিকায় এক ও দুই নম্বরে রয়েছে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর নাম।
তদন্তে উল্লেখ করা হয়, শেল কোম্পানির মাধ্যমে অবৈধভাবে ৩০ কোটি ডলারের সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেয় গান্ধী পরিবার। যার মালিকানা ছিল ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার হাতে। বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে মামলার শুনানি হবে ২৫ এপ্রিল। কংগ্রেসের অভিযোগ প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি বিজেপির দাবি, ঐতিহাসিক পত্রিকাটিকে ব্যক্তিগত এটিএমে পরিণত করেছে গান্ধী পরিবার।
বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর বলেন, ‘খুবই চতুরভাবে একটি কর্পোরেট ষড়যন্ত্র করা হয়েছে পুরো সম্পত্তি পরিবারের হাতে আনার জন্য। ইয়াং ইন্ডিয়া নামে যে প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে, এর ৩৮ শতাংশ মালিকানা সোনিয়া গান্ধীর। ৩৮ শতাংশ মালিক রাহুল গান্ধী।’
এদিকে টানা তৃতীয় দিনের মতো হরিয়ানায় এক জমি কেনা-বেচা মামলায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভাদ্রাকে জেরা করেছে ইডি। গান্ধী পরিবারের অংশ হওয়ায় ২০ বছর আগের মামলায় বিজেপির হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
ভারতীয় উদ্যোক্তা ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্র বলেন, ‘আমি যখনই জনগণ কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়ে কথা বলি, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করি বা রাজনীতিতে যুক্ত হবার চিন্তা করি, তখনই প্রশাসনকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। ২০ বছর পুরোনো এক মামলায় আমাকে ডাকা হয়েছে। এই মামলায় এতদিনে কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কি?’
এদিকে, বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধিত আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে সহিংস বিক্ষোভ ও দাঙ্গার ঘটনায় এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাঙ্গাকে পরিকল্পিত দাবি করে, এর পেছনে অমিত শাহ'র সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে, প্রতিবেশী দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ওয়াক্ফ ইস্যু সামনে এনে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ মমতার।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মুর্শিদাবাদে মুসলিমদের ওপর বিএসএফের গুলিবর্ষণের অভিযোগ তদন্ত করতে মুখ্য সচিব মনোজ পন্তকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’