টেলিকম প্রতারক চক্র: ২৮ দেশের ১০ হাজার নাগরিক উদ্ধার

0

থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে থাকা টেলিকম প্রতারক চক্রের আস্তানা থেকে এখন পর্যন্ত ২৮টি দেশের অন্তত ১০ হাজার নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চীনা নাগরিকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। চলছে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া। প্রায় ৪০টি প্রতারক সংস্থা অন্তত ৩ লাখ বিদেশি ভুক্তভোগীকে দিয়ে প্রতারণার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর তাই চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের যৌথ অভিযান তৎপরতা আরও জোরালো করার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

টেলিকম প্রতারণার মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে একজন স্ক্যামারকে ৫ হাজার ডলার আয়ের টার্গেট দেয় প্রতারক চক্র। লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলে বৈদ্যুতিক শক দেয়া ছাড়াও অন্ধকার ঘরে রেখে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। ৪ সপ্তাহ ধরে অভিযান চালিয়ে মিয়ানমার থেকে ২৮টি দেশের হাজার হাজার ভুক্তভোগী স্ক্যামার উদ্ধারের পর উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অপরাধী চক্রগুলোর হাতে আটকে পড়া ও উদ্ধার হওয়াদের তালিকায় রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, এমনকি ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকও। উন্নত দেশে ভালো চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে মিয়ানমারের বিভিন্ন স্ক্যাম সেন্টারে জিম্মি করে সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য করা হতো তাদের।

প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধে মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের পর চিরুনি অভিযানে একযোগে কাজ করছে চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড।

মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে প্রায় ৪০ টি জালিয়াতি সংস্থার গড়ে তোলা এই অন্ধকার জগতে বিভিন্ন দেশের অন্তত ৩ লাখ মানুষ আটকে আছেন বলে ধারণা করছেন থাইল্যান্ডের এক আইনজীবী।

তবে, এখন পর্যন্ত ১০,০০০ এরও কম ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করায় হতাশ তিনি। আর তাই যৌথ তৎপরতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ আইন বিশেষজ্ঞদের।

থাইল্যান্ডের আইনজীবী র‍্যাংসিমান রোম বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে এই কেলেঙ্কারির সাথে সম্ভবত বিভিন্ন দেশের ৩ লাখ নাগরিককে জড়িত করা হয়েছে। সেখানে আমরা উদ্ধার করেছি মাত্র ১০,০০০ এরও কম। তাহলে, আমরা এই ধরণের ব্যবসা কিভাবে ধ্বংস করতে পারবো। সে ক্ষেত্রে সম্ভাবনা ১০ শতাংশেরও কম বলে মনে হচ্ছে।’

এদিকে ১০ হাজার ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হলেও সবাইকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো এখনো সম্ভব হয়নি। অভিযানে অন্তত ৫ হাজার চীনা নাগরিক উদ্ধার হলেও, ফিরতে পেরেছেন এক হাজারেরও কম। অন্যদিকে, নিজ দেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে একশরও কম ইন্দোনেশিয়ানকে।

চীন এবং তাদের নিজস্ব কিছু রাজনীতিকের চাপে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী পাঁচটি এলাকায় বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ করা হয়। এরপর সর্ব প্রথম মিয়ানমারের জালিয়াতি কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশিসহ ২৬০ বিদেশিকে উদ্ধার করে থাইল্যান্ডের কাছে হস্তান্তর করে মিয়ানমারের ডেমোক্রেটিক কারেন বুদ্ধিস্ট আর্মি।

এএইচ