ইসমাইল হানিয়ার পর ইয়াহিয়া সিনওয়ার। মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে ২ শীর্ষ নেতার মৃত্যুতে বিপর্যস্ত হামাস। কঠিন এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনটির হাল ধরবেন কে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
হামাস প্রধানের দায়িত্ব নেয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন সাবেক নেতা খালেদ মিশাল। ১৯৯৬ সালে হামাসের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন মিশাল। এক বছরের মাথায় জর্ডানে মোসাদ এজেন্টদের বিষ প্রয়োগের শিকার হন তিনি। এজেন্টরা ধরা পরায় বাধ্য হয়ে প্রতিষেধক সরবরাহ করে ইসরাইল। এজেন্টদের ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্ত করা হয় হামাস প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে।
২০১৭ সালে ইসমাইলের কাছে দায়িত্ব দিয়ে অবসর নেন মিশাল। কাতারে অবস্থান করা সত্ত্বেও হামাসে এখনো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে ৬৪ বছর বয়সী এই নেতার।
সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি সিনিয়র ফেলো জনাথান লর্ড বলেন, ‘হামাসের দায়িত্ব কে নেবেন, এটি এখন খোলা প্রশ্ন। আমার মতে খালেদ মিশালের দিকে এখন সবার চোখ রয়েছে। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি হামাসকে পরিচালনা করেছিলেন। এমনকি ইসমাইল হানিয়া নিহতের পর সবাই তাকেই হামাসের কাণ্ডারি ভেবেছিলেন।’
হামাসের রাজনৈতিক শাখার গুরুত্বপূর্ণ নেতা খালিল আল হায়া। আগের সংঘাতগুলোয় অস্ত্র বিরতি নিয়ে আলোচনায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ২০০৭ সালে ইসরাইলি বিমান হামলায় পুরো পরিবারকে হারালেও প্রাণে বেচে যান খালিল। ধারণা করা হচ্ছে, গাজা যুদ্ধ থামাতে চাইলে অস্ত্রবিরতির জন্য কাণ্ডারি হিসেবে খালিল আল হায়াকে বেছে নিতে পারে হামাস।
আলোচনায় হচ্ছে নিহত ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই মোহাম্মাদ সিনওয়ার ও হামাসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মূসা আবু মারজুককে নিয়েও। এদিকে নেতাকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ গাজাবাসী। এই ক্ষতি পূরণেয় নয় বলে মনে করছেন অধিকাংশ মানুষ। যদিও শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে ধারণা গাজাবাসীর।
গাজাবাসীদের একজন বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকেই হামাস নেতাদের হত্যার শিকার হতে দেখছি। ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ায় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তাই বলে যুদ্ধ থেমে যাবে, এটি চিন্তা করাও বোকামি।’
আরেকজন বলেন, ‘তিনি জানতেন তার জন্য শহীদী মৃত্যু অপেক্ষা করছে। সকল ফিলিস্তিনিরা জানেন আমাদের নেতারা শহীদ হয়েছেন। তাই সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।’
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাফাহর তাল আল সুলতান এলাকায় হামলা চালিয়ে ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করে আইডিএফ।