বিদেশে এখন
0

তাজমহলের গুরুত্বপূর্ণ অংশে ফাটল!

বিশ্বের ৭ম আশ্চর্য তাজমহলের গুরুত্বপূর্ণ অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। ছাদ চুইয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। সেইসঙ্গে তাজমহলের গায়ে বেড়ে উঠছে আগাছা। মুছে যাচ্ছে পিলারের গায়ে খোদাই করা কোরআনের আয়াতগুলো। তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার জন্য মোদি সরকারকে দায়ী করছেন অনেকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সমস্যা স্বাভাবিক। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বে সুপরিচিত ঐতিহাসিক নিদর্শন ভারতের আগ্রার তাজমহল। বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম এই নিদর্শন দেখতে প্রতিবছর ভীড় করেন ৭০ থেকে ৮০ লাখ পর্যটক। শুধু তাজমহল থেকেই বছরে দেশটির আয় হয় প্রায় শতকোটি রুপি। সাদা মার্বেলে তৈরি তাজমহলের বিশাল গম্বুজ ও মিনার। পারস্যের ইসলামিক ও ভারতীয় শৈলীর মিশ্রণে গড়ে উঠেছে অনন্য সুন্দর এই নিদর্শন।

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত তাজমহলের মূল গম্বুজ ফুটো হয়ে চুঁইয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে তাজমহল প্রাঙ্গন। পিলার, মিনারসহ সৌধের দেয়াল ও মেঝের গুরুত্বপূর্ণ অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। দিন দিন বদলাচ্ছে রঙ, মুছে যাচ্ছে মহলের দরজায় আরবি ভাষায় খোদাই করা লেখাগুলোও। দেয়ালে জড়ানো মূল্যবান পাথর ক্ষয়ে যাচ্ছে। জীর্ণ দেয়ালে জন্মেছে আগাছা।

তাজমহলের এমন দশায় ধীরে ধীরে কমছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা। আর এই অবস্থার জন্য মোদী সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেছেন উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য আখিলেশ যাদব। তার অভিযোগ, তাজমহলের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতে ব্যর্থ বিজেপি।

এদিকে, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রধান রাজকুমার প্যাটেল তাজমহলের প্রধান গম্বুজে ফুটো হয়ে পানি পড়ার ঘটনা স্বীকার করেছেন। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রধান রাজকুমার প্যাটেল বলেন, ‘তাজমহলের মতো সব ধরনের নির্দশনেই ধুলাবালি, পানি ও পাখির বিষ্টা পড়ে দেয়াল নষ্ট হয়। এছাড়া এসব সৌধের দেয়ালে আগাছা জন্ম নেয়ার ঘটনাও স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে জরুরি হচ্ছে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা। ৭ থেকে ৮ দিন পর পর আগাছাগুলো উপড়ে ফেলতে হবে।’

২০২৩ সালে যমুনার পানি উপচে আগ্রার অমর স্থাপত্য তাজমহলের দেয়াল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। যা বিগত ৪৫ বছরের মধ্যে প্রথম ঘটনা। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শ্বেত পাথরের নির্মিত এই স্মৃতিসৌধের বেশকিছু অংশ।

১৯৮৩ সালে তাজমহলকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। ঐতিহাসিক নিদর্শনটি ১৬৩২ থেকে ১৬৫৩ সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধির উপর নির্মাণ করেন। যা মুঘল স্থাপত্যের অনন্য কীর্তি।

ইএ