কসোভোর উজাড় হওয়া বনাঞ্চল ফিরিয়ে আনতে ড্রোন দিয়ে বীজ বপন করা হচ্ছে। প্রতিটি ড্রোনে ১০০টি বীজের বল থাকে। কালো রংয়ের বলগুলো মাটি, বালি, খনিজ পদার্থ এবং সারের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করা। যা বীজকে পোকামাকড় ও ইঁদুর থেকে রক্ষা করে।
সাসটেইন্যাবিলিটি লিডারশিপ কসোভো বা এসএলকে নামের অলাভজনক একটি সংস্থার তথ্য বলছে, বছরে ৭০০ হেক্টরের বেশি বনভূমি হারাচ্ছে দেশটি। হারিয়ে যাওয়া হাজার হাজার হেক্টর বন ফিরিয়ে আনতে ড্রোনের সাহায্যে পাহাড়ি অঞ্চলে লিন্ডেন ও পাইন গাছের বীজ ফেলা হচ্ছে।
এসএলকের প্রতিষ্ঠাতা ইন্দিরা কার্তালোজি বলেন, আমরা বুটোভকের পাহাড়ি অঞ্চলে উদ্ভাবনী ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে বীজগুলো বপন করেছি। দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে কসোভোর বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে নতুন এই প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
একটি ড্রোন দুই ঘন্টায় এক হেক্টর জমিতে দুই থেকে পাঁচ হাজার বীজ রোপণ করতে পারে। হাতে রোপণের চেয়ে এই পদ্ধতিতে পাঁচগুণ দ্রুত সময়ে করা যায়। এছাড়া ড্রোন দিয়ে প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে বীজ বপন সম্ভব হচ্ছে।
এই প্রকল্পের উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ জানান, ড্রোনের সাহায্যে ফেলা এসব বীজের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ অঙ্কুরিত হয়। তাই প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি বীজ বপন করতে হয়।
পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন রেইন ফরেস্ট এখন অনেকটাই ধ্বংসের মুখে। গাছ কাটা ও দাবানলে উজাড় হয়েছে লাখ লাখ হেক্টর বনভূমি। অবৈধভাবে কাঠ কাটায় ধ্বংস হয়ে গেছে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ বন। কলম্বিয়াতে বাস্তুচ্যুত মানুষের কারণে বনভূমি উজাড় হচ্ছে। সম্প্রতি দাবানলে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া ও ভূমধ্যসাগরের আশপাশের অঞ্চলের বন উজাড় হয়েছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, জ্বালানি হিসেবে কাঠ ও পাতা জনপ্রিয় হওয়ায় এবং নগরায়নের কারণে প্রতিনিয়ত উজাড় হচ্ছে বন। একদিকে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ অন্যদিকে বিপন্ন বন্য প্রাণী। দ্রুত বন উজাড় রোধে এই কৌশল ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আফ্রিকা ও ইউরোপে ব্যবহার করা হচ্ছে।