লোহিত সাগর দিয়ে পাকিস্তান থেকে ইউরোপে চাল রপ্তানির জন্য আগে সময় লাগত ১৮-২৫ দিন। তবে বর্তমানে হুতি আতঙ্কে আফ্রিকার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জাহাজ চলাচলে পাকিস্তানি পণ্য ইউরোপে পৌঁছাতে সময় লাগছে ৫০ দিনের বেশি।
বিশ্বে চাল রপ্তানিতে পাকিস্তান। ছবি: এখন টিভি
পাকিস্তানের করাচি থেকে ইউরোপে যেতে দ্বিগুণ সময় ব্যয় হওয়ায় একটি মালবাহী কনটেইনারের চার্জও ৭শ ডলার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩ হাজার ৬শ' ডলার। এভাবে চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সংকটে ডুবে থাকা দেশটির রপ্তানি বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোরও প্রায় একই হাল। এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানিকারকরা দাবি করছেন, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক বেড়েছে ৪০০ শতাংশের বেশি। আর এক হাজারের বেশি ব্রিটিশ ব্যবসা সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের রপ্তানিকারকদের ব্যয় বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। বিলম্বের সম্মুখীন হচ্ছে সরবরাহ চেইন।
লোহিত সাগরে এশিয়া- ইউরোপের দূরত্ব। ছবি: এখন টিভি
পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, গাজায় আগ্রাসনের জেরে লোহিত সাগরে চলাচল করা ইসরাইলি ও তাদের মিত্রদের জাহাজে হুতি হামলার কারণে, এক বছর আগের চেয়ে বাব আল মান্দেব প্রণালী দিয়ে দৈনিক জাহাজ পরিবহন কমেছে ৬০ শতাংশ। বিপরীতে আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন জাহাজ চলাচল বেড়েছে ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। হুতিদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়েও লোহিত সাগরকে শান্ত করতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
এদিকে লোহিত সাগর বাদ দিয়ে আফ্রিকা ঘুরে যাতায়াতের মাধ্যমে ইউরোপ-এশিয়ার বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত জ্বালানি। কারণ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে জাহাজের গতি বাড়াতে গিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে ২.২ শতাংশ জ্বালানি বেশি লাগছে।
আইএমএফ মনে করছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং লোহিত সাগরে হুতি আতঙ্কে ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি উসকে দেয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এতে খাদ্য, জ্বালানি ও পরিবহন খরচ আরও বেড়ে গেলে অর্থনৈতিক সংকট থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন দেশের নেয়া নানা প্রচেষ্টাও ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।