রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নাভালনির মৃত্যু ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেই উত্তাপ রাশিয়া থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশে। কারাগারে বন্দি অবস্থায় তার রহস্যজনক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বিভিন্ন দেশে থাকা নাভালনির ভক্তরা। তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে রাশিয়ার ৩২টি শহর থেকে তার ৪শ'র বেশি সমর্থক আটক হয়েছেন।
নাভালনির সমর্থকরা বলেন, রাশিয়ার সব রাজনৈতিক বন্দীদের নিয়ে আমরা চিন্তিত। কারাগারে নাভালনির মৃত্যুর বিষয়টি মোটেও স্বাভাবিক নয়। আমি মনে করি, রাশিয়ার সব রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্ত করতে আমাদের কিছু করা দরকার।
২০২২ সালে নির্মিত ডকুমেন্টরি নাভালনিতে তার মৃত্যুর আভাস ছিলো। ড্যানিয়েল রোহার পরিচালিত সেই ডকুমেন্টারিটি অস্কার পায়। যেখানে দেখা যায় পরিচালকের এক প্রশ্নের উত্তরে নাভালনি বলেছিলেন, কেউ যদি তাকে মেরে ফেলতে চায় তাহলে বুঝতে হবে তিনি অসম্ভব শক্তিশালী। সে জন্যই তারা তাকে পথ থেকে সরাতে চাইছে।
ডকুমেন্টারিতে নাভালনির সেই কথাই এখন রাশিয়ার সাধারণ জনগণের মনে ক্ষত তৈরি করেছে। ৪৭ বছর বয়সী নেতার মৃত্যুতে পরিবার এবং দলীয় সমর্থকদের মনেও নানা সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। এমনকি দেশটিতে আসন্ন নির্বাচনটা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই পার করতে, পুতিন তার পথের কাঁটা একেবারেই সরিয়ে ফেলেছেন বলেও ধারণা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। নাভালনির এক ঘনিষ্ঠ মিত্রের অভিযোগ, এই মৃত্যু কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এটি অবশ্যই একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।
আলেক্সি নাভালনির সহযোগী ইভান ঝদানভ বলেন, এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যা। এই ঘটনা অবশ্যই তদন্ত করতে হবে। এই হত্যার পরিকল্পনাকারী ভ্লাদিমির পুতিন। অন্য কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন না।
এর আগে ২০২০ সালেও নাভালনিকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সরকারের অনুমতিতে বার্লিনে চিকিৎসাধীন থাকায় সে যাত্রায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। জার্মান সরকারের মতে, তার রক্তে রাসায়নিক স্নায়ু নিস্তেজক পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল।
রুশ সরকারের মতে নাভালনি ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচর। দেশদ্রোহী এবং বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় তাকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কুখ্যাত আইকে-থ্রি নামক কারাগারে রাখা হয়। জনমানবশূন্য সাইবেরিয়ার সেই কারাগারে শুক্রবার মারা যান এই নেতা। আর তার মৃত্যুতে পুতিনকে সন্দেহ করায় মরদেহটি লুকিয়ে ফেলা হতে পারে বলেও অভিযোগ উঠেছে।