আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ আফ্রিকা। গেল কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে যতসংখ্যক মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তার ৯৫ শতাংশই আফ্রিকার নাগরিক।
শুধু তাই নয়, ২০২১ সালে বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় মারা যাওয়া মোট রোগীর প্রায় ৯৬ শতাশংই আফ্রিকার বাসিন্দা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'র হিসেব বলছে, প্রতিবছর এখানে ম্যালেরিয়ায় মারা যান প্রায় ৬ লাখ মানুষ। যাদের বেশিরভাগই শিশু।
ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে, এবার প্রথমবারের মতো নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি চালু করলো মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন। দেশটির একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক কন্যাশিশুকে টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় এই কর্মসূচি। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে বিনামূল্যে দেয়া হবে ম্যালেরিয়ার আরটিএসএস ভ্যাকসিন।
ক্যামেরুনের ৪২টি জেলায় ছয় মাস বয়সী শিশুদের অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। এসব জেলার শিশুদের দুই বছর বয়স পর্যন্ত নিতে হবে ভ্যাকসিনের ৪টি ডোজ। প্রথমবারের মতো এই কার্যক্রম চালু হলেও, দেশটির নাগরিকদের মাঝে টিকার সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা নিয়ে রয়েছে, ভয় ও সংশয়।
এক অভিভাবক বলেন, 'ভ্যাকসিন সম্পর্কে প্রথমে আমি জানতাম না, আমাকে সচেতন করা হয়নি। ম্যালেরিয়া এড়াতে আমার সন্তানকে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভ্যাকসিন সর্ম্পকে সকলের মাঝে প্রচার বাড়ানো গেলে এর সুফল মিলবে।'
দেশটির টিকা কর্মকর্তাদের দাবি, ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর। টিকার কার্যকারিতা ও সুরক্ষা নিয়ে সকলকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
দেশটির একজন টিকা কর্মকর্তা বলেন, 'বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমি সত্যিই কামনা করেছিলাম, অনেক লোকজন তাদের সন্তানদের টিকা দিতে আসবে। ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে দ্বিধাগ্রস্ত। টিকা সম্পর্কে জনসাধারণকে জানানো উচিত। যাতে আমরা তাদের ভয়কে দূর করতে পারি।'
প্রায় ৪০ বছর গবেষণা চালিয়ে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আরটিএসএস ভ্যাকসিন তৈরি করেছে ব্রিটেনের বিখ্যাত ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জিএসকে। মার্কিন গবেষকদের দাবি, ম্যালেরিয়ার এই টিকা ৩৬ শতাংশ কার্যকর।
চলতি বছর বিশ্বের আরও ১৯টি দেশে এই টিকা কার্যক্রম শুরু করতে চায় গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স।