ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর বেথলেহেম। নগরীটি যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থান। প্রতিবছর ক্রিসমাস বা বড়দিন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজে উঠে ঐতিহাসিক এ শহরটি।
মুখরিত হয় তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের আনাগোনায়। তবে গাজা ও পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের জেরে যিশুর আগমনী দিনে এখানকার উৎসবের রঙ এবার খানিকটা মলিন।
বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যখন ক্রিসমাস উদযাপনে মেতেছেন, তখন বেথলেহেমের গির্জার ভেতর কেবল নিয়ম রক্ষার ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনায় সীমাবদ্ধ। যুদ্ধ আতঙ্কে জামকালো আয়োজনতো নেই, উপহার দেয়া-নেয়ার মধ্য দিয়ে আনন্দ ভাগাভাগিতেও ভাটা পড়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, 'অন্য যেকোন ফিলিস্তিনি শহরের মতো বেথলেহেমও শোকের মধ্যে আছে। তাই বেথলেহেমে বড়দিনের সমস্ত উৎসব এবং উদযাপন বাতিল করা হয়েছে। আমরা এরমধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে চাই। তা হলো বেথলেহেম গাজা উপত্যকায় চালানো ইসরাইলি আগ্রাসন প্রত্যাখ্যান করে।'
বড়দিনে পর্যটকশূন্য ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহর
ইসরাইলি বর্বরতায় এখানকার মানুষ যে কতটা কষ্টে আছে, তার প্রমাণ মিলে ইনকিউবেটরে রাখা শিশু যিশুর এই চিত্র। গাজাবাসীর প্রতি সংহতি প্রদর্শনে বেথলেহেমের গির্জার সামনে এমন অভাবনীয় কাজটি করে দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনি শিল্পী রানা বিশারা। যার মাধ্যমে গাজার হাসপাতালে ভর্তি নবজাতকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া ইসরাইলি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'গাজার নিরীহ জনগণ ও শিশুদের উপর প্রায় ৮০ দিন ধরে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ চালানো হচ্ছে। ইনকিউবেটরে শিশু যিশু ঘুমানোর এই দৃশ্যটি গাজার বর্তমান অবস্থার প্রতীক। এটি যুদ্ধ বন্ধে আমার আর্তচিৎকারের অংশ। ইনকিউবেটরে থাকা অপরিণত বাচ্চাদেরও তারা মমতা দেখাচ্ছে না।'
বড়দিন ঘিরে ভ্যাটিকান সিটির উপাসনালয়ে বিশ্বের রোমান ক্যাথলিকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। এসময় ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ক্রিসমাসের আসল বার্তা হল শান্তি এবং ভালবাসা।