যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে টিকটক নিষিদ্ধের আইন বাস্তবায়নের পথে হাঁটছিল ওয়াশিংটন। ১০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনটি বাস্তবায়নের পক্ষে রায় দিলে ১৯ জানুয়ারি মধ্যে মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে টিকটক বিক্রি করতে হবে মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে। অন্যথায় এপ্রিলে টিকটক নিষিদ্ধের প্রস্তাবে ভোটাভুটি হওয়ার কথা কংগ্রেসে।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে থেকে চীনা পণ্যে কর বাড়ানোসহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যনীতিতে বেইজিংকে কোনো ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও টিকটক ইস্যুতে এবার কিছুটা নমনীয় আচরণ করছেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, টিকটক নিষিদ্ধের আইন আপাতত স্থগিত করতে সুপ্রিম কোর্টের লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। মালিকানাধীন চীন প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স বারবার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আনা গ্রাহকের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে। কিন্তু, ১৯ জানুয়ারি আলাদত যদি তাদের বিরুদ্ধে আয় দেয় তাহলে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগের দিনই যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে টিকটক।
গেল মাসে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ট্রাম্প। চীন বিরোধী সুর পাল্টে বলেন, টিকটকের প্রতি ধীরে ধীরে অনুরক্ত হতে শুরু করেছেন তিনি। বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসকে ৩৪ পয়েন্টের ব্যবধানে পেছনে ফেলেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘টিকটক নিষিদ্ধের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করতে চাই। সামাজিক মাধ্যম টিকটক আমার মন জয় করেছে। তরুণদের ভোটে ৩৪ পয়েন্টের লিড পেয়েছি। অনেকেই বলছেন এর পেছনে টিকটকের অবদান আছে। আমারও তাই মনে হয়। এজন্য আবারও টিকটক নিয়ে ভাবছি। আমরা কিন্তু তরুণদের একচেটিয়া সমর্থন পেয়েছি।’
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তরুণদের কোনোভাবেই চটাতে চাচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিবিএস নিউজ বলছে, রিপাবলিকান প্রচার দলের দাবি ট্রাম্পের জন্য জনসমর্থন আদায়ে টিকটক যেভাবে ভূমিকা রেখেছে তা রীতিমতো অপ্রত্যাশিত। তবে, কোন রাজনৈতিক সমাধানের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প- তা এখনও পরিষ্কার নয়। বিশেষ করে টিকটকের মালিকানাধীন বাইটড্যান্স ইউজারের তথ্যসহ, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন আলামত পৌঁছে দিচ্ছে চীনা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে- এমন অভিযোগের বিপরীতে ট্রাম্প কোন পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন তাও স্পষ্টভাবে জানা যাচ্ছে না।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষ কর্মী আনার একটি ভিসা প্রোগ্রাম নিয়ে অনলাইনে বিরোধে জড়িয়েছে ট্রাম্প সমর্থকরা। যদিও সরকারি ব্যয় কমাতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সি দপ্তরের মনোনীত উপদেষ্টা ভিভেক রামাসুয়ামি বলছেন, যে সব প্রতিষ্ঠান এইচ-ওয়ান-বি টেম্পোরারি ভিসায় দক্ষ শ্রমিক আনার পরিকল্পনা করে আসছেন, ঐতিহাসিকভাবে মার্কিনরা এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের অপছন্দ করেন। কাজেই অনলাইনে সমর্থকদের কোন্দল দেখে রিপাবলিকান ঘাঁটিতে ফাটল ধরেছে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো বোকামি হবে।