আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

শেয়ারবাজার থেকে একদিনে আদানি গ্রুপের ২৪৩ কোটি ডলার গায়েব

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গের ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিভিন্ন সূচকের দরপতন হয়েছে। শেয়ারবাজার থেকে একদিনে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের ২শ' ৪৩ কোটি ডলার গায়েব হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের চলমান এই অস্থিরতা, অস্থিতিশীল করে তুলেছে দেশের রাজনীতির মাঠ। যদিও, শেয়ারবাজার কারসাজির বিষয়টি অস্বীকার করেই যাচ্ছে আদানি গ্রুপ আর ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

গেল কিছুদিন ধরেই ভারতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম দেশটির শেয়ারবাজার কারসাজির চাঞ্চল্যকর খবর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও আলোচনার শীর্ষে ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ে হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন ইস্যু। শেয়ারবাজারে বড় ধরনের কারসাজির এমন অভিযোগে কেবল বিনিয়োগকারীরা নয়, বিপাকে পড়েছেন নিয়ন্ত্রকরাও। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক বার্তায় জানায়, ভারতে বড় কিছু হতে চলেছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই দেশটির সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সেবার প্রধান মাধবী বুচির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, শেয়ারবাজারে কারসাজি করে অর্থ হাতিয়ে নিতে আদানি গ্রুপকে সহযোগিতা করেছেন তিনি।

যদিও সেবি বারবার বলে আসছে, আদানি গ্রুপের কারসাজির সঙ্গে কোন সম্পৃক্ততা নেই মাধবি বুচের। এই ঘটনার পর থেকে আরও টালমাটাল দেশটির শেয়ারবাজার পরিস্থিতি। সোমবার (১২ আগস্ট) সূচকের দরপতনের মধ্য দিয়ে এদিনের লেনদেন শেষ হয়। আজ মঙ্গলবার ( ১৩ আগস্ট) আবারও সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে সেনসেক্সসহ বিভিন্ন সূচকের। কমতে থাকে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরও। একদিনেই বাজার থেকে হারিয়ে যায় প্রায় আড়াইশ' কোটি ডলার।

ভারতের শেয়ারবাজারে আদানি গ্রুপের ১০ টি প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলোতে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক। এরমধ্যে আছে বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রতিষ্ঠান। যদিও চলমান এই অস্থিরতাকে সাময়িক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

আদানি গ্রুপের সঙ্গে হিন্ডেনবার্গের যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ১৮ মাস আগে, যখন এই প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপকে অভিযুক্ত করে নানা অভিযোগে। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকির। ২০২৩ সালে হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ১৫ হাজার কোটি ডলার থেকে আদানি গ্রুপের শেয়ারের মূল্য কমে যায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। এরমধ্যেই সেপ্টেম্বরে ১শ' কোটি ডলারের শেয়ার বাজারে ছাড়তে যাচ্ছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। হিন্ডেনবার্গের সব অভিযোগই প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে আদানি গ্রুপ আর সেবা।

শেয়ারবাজারের এই কারসাজি নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে গোটা ভারতে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলছেন, এরমধ্য দিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও জানান তিনি। বিতর্ক আছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বেশ কাছের ব্যবসায়ী আদানি গ্রুপের স্বত্বাধিকারী গৌতম আদানি। এই রাজনৈতিক সখ্যতায় সবসময়ই লাভবান হয়েছে আদানি গ্রুপ।

tech