আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

দুই বছরে রাশিয়ায় ২৩০ কোটি ডলার-ইউরো ঢুকেছে

মার্কিন ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে শত-কোটি ডলার ও ইউরো প্রবেশ করছে রাশিয়ায়। দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাংকনোট সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এরপরও এই সময়েই দেশটিতে ডলার ও ইউরোতে প্রবেশ করেছে ২৩০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরপরই দেশে বৈদেশিক মুদ্রার উত্তোলন সীমিত করে দেয় রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রুশ মুদ্রা রুবল দুর্বল হতে থাকায় সে সময় নেয়া হয় এ পদক্ষেপ। তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত রাশিয়া থেকে বেরিয়েছে মাত্র ৯ কোটি ৮০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ডলার ও ইউরোর ব্যাংকনোট। বিপরীতে রাশিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার প্রবেশ ছিল অনেক বেশি।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়ায় নিজেদের ব্যাংকনোট সরবরাহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তখন থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ মাসে বিল বাবদ বিশ্বের প্রধান দুই মুদ্রায় প্রায় ২৩০ কোটি ডলার ও ইউরোর পাঠানো হয়েছে রাশিয়ায়। নিষেধাজ্ঞার আগে এ অঙ্ক ছিল বেশ বড়। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে মাত্র চার মাসে এক হাজার ৮৯০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ডলার আর ইউরোতে প্রবেশ করে দেশটিতে। তার আগের চার মাসে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭০০ কোটি।

শুল্ক তথ্য যাচাইয়ের ভিত্তিতে রয়টার্স বলছে, বহির্বিশ্বে নগদে পণ্য আমদানির নিষেধাজ্ঞায় কোনো না কোনো উপায়ে ফাঁকি দিতে পেরেছে রাশিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের তথ্য যতোই মস্কো গোপন করুক না কেন, বাণিজ্য ও ভ্রমণ বাবদ দেশটিতে ডলার আর ইউরোর নগদ প্রবাহ যথেষ্ঠ রয়েছে। বিশেষ করে অনেক ক্ষেত্রেই বিদেশি ব্যাংকনোট পাঠানোর বিনিময়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ-রূপাসহ মূল্যবান ধাতু পাঠিয়েছে মস্কো।

শুল্ক তথ্যে দেখা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত আর তুর্কিয়ে থেকে নগদ অর্থ রাশিয়ায় প্রবেশ করে। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি এ দু'টো দেশ। উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পণ্য রপ্তানির মোট লেনদেনের অর্ধেকের বেশিই নথিভুক্ত করেনি রুশ প্রশাসন।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়াকে সহযোগিতার অভিযোগে তৃতীয় দেশগুলোর বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গেলো ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে, বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ পরিশোধে বিদ্যমান ঝামেলার মধ্যেই মস্কোতে সবচেয়ে বেশি লেনদেনকৃত বিদেশি মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে চীনা মুদ্রা ইউয়ান। কিন্তু বিদেশ ভ্রমণ, স্বল্প পরিমাণে আমদানি ও অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে বিদেশি মুদ্রাগুলোর মধ্যে ডলারই চান বিপুলসংখ্যক রুশ নাগরিক, বলছেন বিশ্লেষকরা।

নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার জেরে ২০২২ সাল থেকেই ডলার ও ইউরোকে বিশাক্ত আখ্যা দিতে শুরু করে রাশিয়া। ইউরোপে দেশটির প্রায় ৩০ হাজার কোটি ডলার জব্দ হয়ে পড়ে আছে।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর