প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
0

২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার

দীর্ঘ সময় নিম্নমুখী থাকার পর চলতি বছর বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি খাত ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। বিশেষ করে এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৯৪ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের ফেব্রুয়ারি আইটি অপরচুনিটি আপডেট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশেরও বেশি বৈশ্বিক বিভিন্ন ঘটনার কারণে প্রভাবিত হচ্ছে। যার মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভূরাজনৈতিক সংকট ও দ্বন্দ্ব, জ্বালানি নিরাপত্তা, সাইবার হামলার ও নির্বাচনের মতো বিষয় রয়েছে।

মূল্যস্ফীতি থেকে শুরু করে মন্দার সম্ভাবনা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক অনেকটাই অস্থিতিশীল রয়েছে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন তাদের কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো, কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আরও সচেতন হচ্ছে।

ক্যানালিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উত্তর আমেরিকায় চলতি বছর ব্যয় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে। এর মাধ্যমে মোট বৈশ্বিক ব্যয়ের ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ থাকবে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণে। এ অঞ্চলে অনেকগুলো প্রযুক্তি জায়ান্ট ও স্টার্টআপের বিকাশ ঘটেছে। পাশাপাশি সরকারি পর্যায়েও এ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যয় বাড়বে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চীন ও ভারতে প্রযুক্তি খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি এ ব্যয় বাড়ানোয় বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায়ও ৪ দশমিক ২ শতাংশ ব্যয় বাড়বে। তবে দুর্বল রপ্তানি, দক্ষ কর্মী সংকট, উচ্চ সুদহার ও জ্বালানি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও দুর্বল অবস্থায় থাকবে।

চ্যানেল সহযোগীরাও বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের বাকি সময় হার্ডওয়্যার থেকে শুরু করে সফটওয়্যার ও পরিষেবা খাতে এসব চ্যানেল সহযোগীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে গ্রাহক বা ভোক্তা পর্যায়ে জটিল প্রযুক্তি পরিষেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবদান সহায়ক হবে।

অন্যদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চলতি বছর মূল আলোচনায় থাকলেও আগামী কয়েক বছরে এর পরিধি বাড়বে। প্রযুক্তিবিশারদদের মতে, আগামী কয়েক বছর তথ্যপ্রযুক্তির সব খাতে বিনিয়োগের দিক থেকে জেনআই এগিয়ে থাকবে। চলতি বছর এআই'র ব্যবহার শুরু হলেও সামনের বছরগুলোয় পুরো প্রযুক্তি খাতেই আমূল পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদী বিশ্লেষকরা। ক্যানালিসের পূর্বাভাস, ২০২৮ সাল নাগাদ চ্যানেল ইকোসিস্টেমের জন্য জেন এআই ১৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের সম্ভাবনায় পরিণত হবে।

প্রযুক্তি খাতে ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেশকিছু খাতে পরিবর্তন আসবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে পার্সোনাল কম্পিউটারের বাজার পুনরায় প্রবৃদ্ধিতে ফিরবে। এআই নির্ভর মডেলগুলো ব্যবহারকারীদের নতুন ডিভাইস ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবে। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা খাতে ব্যয়ও বাড়বে। বর্তমানে সাইবার হামলা নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্লাটফর্মে বিনিয়োগ বাড়বে। ক্লাউডনির্ভর অবকাঠামো ও পরিষেবার পরিধি বাড়বে। দ্রুতগতির এ পরিষেবা গ্রহণে গ্রাহক পর্যায়েও ব্যয় বাড়বে।