ব্ল্যাকবেরির শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে কানাডায়। তখন এর নাম ছিল রিসার্চ ইন মোশন লিমিটেড বা RIM (Research In Motion)।
১৯৯৯ সালে ব্ল্যাকবেরি প্রথম বাজারে আনে পেজার ব্ল্যাকবেরি ৮৫০। পেজারটির বিশেষত্ব ছিল এটিতে প্রথমবারের মতো QWERTY কীবোর্ড ব্যবহার করা হয় এবং পেজারটি দিয়ে যেকোনো জায়গা থেকে মেইল এক্সেস করা যেত। তখনকার সময়ে যা ছিল অকল্পনীয়।
৯০ দশকের শেষের দিকে এর নামকরণ করা হয় ব্ল্যাকবেরি। ২০০৬ সালের দিকে ব্ল্যাকবেরি ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সেসময় তারকাদের হাতে শোভা পেতো ব্ল্যাকবেরির ফোন। ব্ল্যাকবেরি যখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে ঠিক তখনই ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে অ্যাপল। বড় ডিসপ্লে, ফুল টাচস্ক্রিনের মাধ্যমে তারা তাদের প্রথম আইফোন। তবে অ্যাপল তাদের প্রথম ফোন দিয়ে খুব বেশি জনপ্রিয় হতে পারেনি। কারণ তাদের ফোনের দামও ছিল ব্ল্যাকবেরির থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
২০০৮ সালে ব্ল্যাকবেরি বাজারে নিয়ে আসে তাদের প্রথম টাচস্ক্রিন ফোন। কিন্তু ফোনটি তেমন জনপ্রিয়তা পেতে ব্যর্থ হলেও ভালোই চলছিল ব্ল্যাকবেরির বাজার। ২০১০ সালে ধীরে ধীরে প্রযুক্তি পরিবর্তিত হতে শুরু করে। এই পরিবর্তনটি উপেক্ষা করতে শুরু করে ব্ল্যাকবেরি। আর এই কারণে চরম মূল্য দিতে হয় ব্ল্যাকবেরিকে।
২০০৮ থেকে ২০১১ সালের ভেতরে ব্ল্যাকবেরি তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ফোন বাজারে এনেছিল। যেগুলোর ভেতরে অন্যতম হচ্ছে- ব্ল্যাকবেরি বোল্ড, ব্ল্যাকবেরি কার্ভ, ব্ল্যাকবেরি ট্যুর-এর মত ফোন।
২০১১ দিকে সালের দিকে ধীরে ধীরে আধিপত্য হারিয়ে ফেলতে শুরু করে তারা। অনেক গ্রাহকরা আইফোন এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি-এর মতো ডিভাইসের দিকে ঝুঁকে পড়েন। কারণ এন্ড্রোয়েড এবং আইফোনের ফিচার দর্শকদের আকৃষ্ট করে। সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি গ্রহণ না করা এবং বিরক্তিকর অপারেটিং সিস্টেম তাদেরকে অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলে দেয়।
কোম্পানিটি সাধারণ গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে ফোন তৈরি করেনি। তারা পুরোনো ফিচারে চলতে থাকে। অ্যান্ড্রয়েড বাজারে পা রাখায় অপারেটিং সিস্টেমের চেহারা বদলে যাচ্ছিল। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের বদলাতে পারেনি কোম্পানিটি। ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ছিল এর রাজত্বকাল। তারপর যেন ঠিক কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে ব্ল্যাকবেরি। অবশেষে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে ব্ল্যাকবেরি অপারেটিং সিস্টেম। গ্রাহকদের হাত থেকে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেয় ব্ল্যাকবেরি।