ভিসার মেয়াদ শেষ না হতেই জোরপূর্বক বাংলাদেশি কর্মীদের ফেরত পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া!

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়া থেকে ফিরে আসা কর্মীরা
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়া থেকে ফিরে আসা কর্মীরা | ছবি: এখন টিভি
0

আবারও দেশে ফিরলেন মালয়েশিয়ার মেডিসেরাম কোম্পানির ৩১ কর্মী। গতকাল (রোববার, ২৩ নভেম্বর) রাতে দুটি আলাদা ফ্লাইটে তাদের দেশে পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি। দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মীদের বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনার দাবি করা হলেও বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ভিসার মেয়াদ থাকলেও অনেককেই দেশে ফিরতে হচ্ছে শূন্য হাতে।

গতকাল রাত ১২টায় মালয়েশিয়া থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরেছেন ২১ প্রবাসী কর্মী। এরপর রাত ১টায় ফিরে আসেন আরও দশ কর্মী।

দেশটির মেডিসেরাম কোম্পানির সাথে কয়েকমাস ধরে চলা বিরোধের জেরে ফিরতে হলো তাদের। যদিও কারও সাত মাস, কারও নয়, কারও আবার ছিলো দশ মাসের বৈধ ভিসা। তবে ভিসা বাতিল করে তাদের সবাইকে দেশে পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি।

মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘প্রথমে পাঠিয়েছে ১০ জনকে, তারপর পাঠিয়েছে ৬ জনকে, জোরজবরদস্তি করে। পরবর্তীতে ২৬ জনকে আবার বাতিল করেছে। গত ২ দিন আগে আবার আমাদের ২২ জনকে বাতিল করেছে। তাই কোনোভাবেই আমাদের ওখানে থাকার মতো অবস্থা নেই।’

আরেকজন বলেন, ‘লোকজনের এখনো প্রায় ৬ থেকে ৮ মাস করে সবারই মেয়াদ ছিল চুক্তির। তারপরও আমাদের জোরপূর্বক তারা পাঠিয়ে দিয়েছে।’

আরও পড়ুন:

দেশটির নিলাই শহরে অবস্থিত মেডিসেরাম নামে প্রতিষ্ঠানটি ১৭২ বাংলাদেশি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার পর ধাপে ধাপে দেশে পাঠানো শুরু হয়। চলতি মাসে প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত তিন স্তরে ৪৪ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি মোট ৯৭ বাংলাদেশিকে পাঠিয়ে

এদিকে গেল সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির ২৬ বাংলাদেশি কর্মীর পক্ষে একটি প্রতিনিধিদল হাইকমিশনে সাক্ষাৎ করে। তাদের দাবি নিয়ে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেয় হাইকমিশন। যদিও সপ্তাহ না ঘুরতেই ৩১ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠালো ওই প্রতিষ্ঠান। যদিও হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে দেয়া বিবৃতিতে দ্রুত ধর্মঘটের অবসান না হলে সব কর্মীর বাংলাদেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার ঝুঁকির ইঙ্গিত ছিল।

অন্যদিকে, জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ পদ্ধতি ও নিয়মতান্ত্রিক শোষণের কারণে শ্রমিক ও তাদের পরিবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন বলে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বহু শ্রমিক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, পাসপোর্ট আটকে রাখা ও চাকরির শর্তাবলির অসঙ্গতির শিকার হয়ে বিশাল অঙ্কের ঋণের ভারে জর্জরিত হচ্ছেন বলেও সম্প্রতি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে জাতিসংঘ।

এসএইচ