মালয়েশিয়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবায় নিযুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এক্সপ্যাট সার্ভিসেস কুয়ালালামপুরের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে মিশনকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলক সেবা দেয়ার এক বছরের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিলো অন্তর্বর্তী সরকার। শর্ত মোতাবেক চুক্তি শেষ করতে ৩ মাসের সময় বেধে দিয়েছে হাইকমিশন।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে মালয়েশিয়ায় দায়িত্ব দেয় আওয়ামী সরকার। কিন্তু শর্ত উপেক্ষা করে সরকারি প্রায় সব সেবা কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটির আধিপত্য বিস্তারে হাইকমিশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ আছে।
আর এতেই অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পরে হাইকমিশনের পাসপোর্ট উইং। প্রতিষ্ঠানটির চুক্তির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর জন্য সুপারিশও করছিলো ওই কর্মকর্তা। অথচ পাসপোর্ট, এনআইডি ও ট্রাভেল পাস দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না প্রতিষ্ঠানটির।
ইএসকেএলের অদক্ষতায় সেবা নিতে যাওয়া প্রবাসীদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এমনকি নিরাপত্তা কর্মীর হাতে লাঞ্ছিতও হয়েছেন প্রবাসীরা। দেশ থেকে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
এসব কারণেই ইএসকেএলের প্রতি চরম অসন্তোষ তৈরি হয় প্রবাসীদের। ওঠে চুক্তি বাতিলের দাবি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রবাসীদের সেই দাবি আরও জোড়ালো হয়। অবশেষে অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।
প্রবাসীদের একজন বলেন, ‘সেসময় যে চুক্তি হয়েছিল তা ছিল অবৈধ। এইটা একটা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হয়েছিল।’
আরেকজন বলেন, ‘একটা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে যে ইএসকেএলের চুক্তি বাতিল করেছে।’
ইএসকেএলের সেবা নিতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য ১৩ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া এবং জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতো। যা অনেক সাধারণ প্রবাসীর পক্ষেই সম্ভব না। দালালের দারস্থ হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়েও ঝুঁকি পড়েন প্রবাসীরা।
সার্ভিস চার্জ নিয়েও দালাল চক্রের জন্য সুযোগ রাখার অভিযোগ আছে ইএসকেএলের বিরুদ্ধে।
এ অবস্থায় ই-পাসপোর্টসহ সব ধরনের সেবা ভোগান্তিমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে হাইকমিশন। আর শিগগিরই এমআরপি পাসপোর্ট চালুর দাবি মালয়েশিয়া থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের।