প্যারালাইসিস কথাটা শুনলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আসলে যেকোনো সুস্থ মানুষও হঠাৎ প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ বা সারা বিশ্বে প্যারালাইসিসের অন্যতম কারণ আমরা দেখেছি স্ট্রোক। আর এই স্ট্রোক হচ্ছে মস্তিষ্কের একটা রোগ যা থেকে প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও যদি কয়েকদিন যাবত কোমর ব্যথা, ঘাড় ব্যথা বা মাংসপেশির ব্যথা থাকে, কিন্তু যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে একদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।
প্যারালাইজড একসঙ্গে সব হাত-পা হবে এমনটা নয়। যেকোনো একটা হাত, একটা পা বা মুখে হতে পারে। আমরা প্রায় সময়ই বেলস পালসি বা মুখ বেঁকে যাওয়া দেখে থাকি।
এছাড়া একটা বাচ্চার জন্মের পরেও প্যারালাইসিস গ্রস্থ বা জন্মগত সমস্যা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে। আবার একজন সুস্থ ৫০ থেকে ৬০ বছরের মানুষও হঠাৎ করে প্যারালাইজড হতে পারে। এটাকেই আমরা বলছি স্ট্রোক।
তাছাড়া বিভিন্ন রোগ যেমন মোটর নিউরন ডিজিজ ও নার্ভের ডিজঅর্ডার অর্থাৎ স্নায়বিক ব্যাধি থেকে হওয়া প্যারালাইসিস কিন্তু একদিন হয় না এটি ধীরে হতে থাকে।
এছাড়া বিভিন্ন ভাইরাল ব্যাকটেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু জ্বর এবং করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা প্রচুর প্যারালাইজড রোগী দেখতে পাচ্ছি।
প্যারালাইসিস হঠাৎ করেও হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্য রোগ থেকেও প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে। আবার বিভিন্ন ওষুধের প্রভাব থেকেও প্যারালাইসিস হতে পারে।
প্যারালাইসিস হলে করণীয়
হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়লে যদি কেউ হাত পা নাড়াতে না পাড়ে তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। তাহলে যদি মুখ থেকে লালা পড়ে সেটা আর তার শ্বাসনালিতে যাবে না। এরপর যদি দেখা যায় এটি মেডিকেল ইমার্জেন্সিতে রোগী অজ্ঞান থাকে তাহলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
এসব ক্ষেত্রে রোগীদের প্রেসার ডায়াবেটিস অন্যান্য রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। তাই সচেতনতা খুবই জরুরি। প্যারালাইসিস হয়ে গেলে প্রস্রাব-পায়খানা সমস্যা দেখা দিতে পারে সেজন্য ট্রেনিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর রোগীর হাইজিন মেইনটেন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাবার-দাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকসময় এসব রোগীর ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে আবার রিকারেন্ট স্ট্রোক করে। তাই এসব সম্পর্কে আমাদেরকে শিক্ষা এবং জনসচেতনতা দরকার।
প্যারালাইসিস হয়ে গেলে অ্যাডভান্স চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। সেই সচেতনতাটা আমাদের দরকার। আমরা বাসায় রোগীদের ফেলে রাখব না।
আমরা চেষ্টা করব পুনর্বাসন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা নেওয়ার। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আমরা ইলেক্ট্রো দিয়ে থাকি আর সঙ্গে হসপিটালে কিছুদিন রাখতে হয়। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন এক্সারসাইজ দিয়ে থাকি। রিহ্যাবিলিটেশন টিমওয়ার্কে মাধ্যমে প্যারালাইসিস রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে বা সুস্থতার পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।