বর্তমানে এ সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯। দেশে প্রতি বছর অন্তত প্রতি লাখে ২২১জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর মধ্যে ৩ হাজার ৩০০ জন ওষুধ প্রতিরোধী (এমডিআর) যক্ষ্মায় আক্রান্ত।
এ পরিস্থিতিতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম জোরদার, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সংশ্লিষ্ট সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিতভাবে কাজ করা, দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়ন বাড়ানো, সঠিকভাবে শিশু যক্ষ্মারোগী শনাক্তকরণ, যক্ষ্মা চিকিৎসাকে আরও অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস, ডা. আফজালুর রহমান, উপপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; ডা. আহমেদ পারভেজ জাবিন, বিভাগীয় বিশেষজ্ঞ, গ্লোবাল ফান্ড; শায়লা ইসলাম, সহকারী পরিচালক, ব্র্যাকসহ প্রমুখ।
এতে ব্র্যাক, আইসিডিডিআরবি, পিএইচডি, কেএমএসএস, নাটাব, বিজিএমইএ, সহ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে জড়িত সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তাসহ মোট ৪০ জনের ও বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নারী মৈত্রীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগের পরিচালক মাসুদা বেগম। যক্ষ্মা বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিএফসিএস রাউন্ড ১২ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী তৌহিদা সুলতানা। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, যক্ষ্মা বিশ্বের ১০টি প্রধান মরণব্যাধির একটি। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যক্ষ্মা নির্মূলের মাধ্যমে ১.২ মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান- স্টপ টিবি পার্টনারশিপ এবং অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যক্ষ্মা প্রতিরোধে সরকার ২০২১-২০২৫ পাঁচ বছর (২০২১-২০২৫) মেয়াদি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস বলেন, ‘সরকার যক্ষ্মা নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
তিনি বলেন, ‘গত এক দশকে লাখে মৃত্যু কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সচেতনো বাড়াতে হবে। সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করতে হবে। যাতে মানুষ বিচ্ছিন্নতার ভয়ে চিকিৎসা নেয়া বন্ধ না করে। পাশাপাশি সব সংসদ সদস্যদের নিজ জেলা, উপজেলা পরিদর্শন করতে হবে।
শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যক্ষ্মা কীভাবে নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে আমরা সবাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আশাবাদী- সরকারের সহযোগিতায় আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে খুব শিগগিরিই যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারবো।’
প্রসঙ্গত, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সহযোগিতায় এবং স্টপ টিবি পার্টনারশিপ, জাতিসংঘের ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) ও সিএফসিএস রাউন্ড ১২ এর অর্থায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারী মৈত্রী ঢাকার মোহাম্মদপুর, মহাখালী এলাকার বস্তি এলাকাগুলোতে ২০২১ সাল থেকে যক্ষ্মা শনাক্তকরণ, কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, সন্দেহভাজন যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, রেফারেল ও ডটস কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।