প্রাকৃতিক উপায়ে কার্বন কমাতে সমুদ্র ব্যবহার করছেন বিজ্ঞানীরা

কার্বন কমাতে সমুদ্র ব্যবহার
কার্বন কমাতে সমুদ্র ব্যবহার | ছবি: সংগৃহীত
0

বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমুদ্রকে কাজে লাগাচ্ছেন একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, সমুদ্রের পানিতে মিশে থাকা বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইড আলাদা করতে পারলে বৈশ্বিক কার্বন দূষণ উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব। বিজ্ঞানীদের দাবি, কার্বন শোষণের এই পুরো বিষয়টি ঘটানো হচ্ছে প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করে।

কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমাতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন একের পর এক সম্মেলন আয়োজনে ব্যস্ত, দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি, তখন প্রকৃতির সাহায্য নিয়ে বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণ কমানোর পথে হাঁটছেন যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী।

ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে চলছে এমনই এক অভিনব প্রচেষ্টার ট্রায়াল। সংশ্লিষ্টরা এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন সি-কিওর। যেখানে বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইড সমুদ্রে দ্রবীভূত হওয়ার পর, প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করে ঐ কার্বন ডাই অক্সাইড পানি থেকে আলাদা করছেন বিজ্ঞানীরা।

মানবসৃষ্ট কারণে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের ২৫ শতাংশই শোষণ করে সমুদ্র। ফলে, সমুদ্রের পানি থেকে দ্রবীভূত এই কার্বন আলাদা করতে পারলে অনায়াসেই বায়ুমণ্ডল থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্বনের নিঃসরণ কমানো সম্ভব। কারণ সমুদ্রের পানি থেকে একবার কার্বন আলাদা করতে পারলে ঐ পানি আবারও বায়ু থেকে কার্বন শোষণ শুরু করে দেয়। ফলে, এই চক্রটি চালিয়ে যাওয়াই মূলত বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার প্রধান লক্ষ্য।

বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, বাতাসের তুলনায় সমুদ্রের পানির কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ ক্ষমতা দেড়শো গুণ বেশি। তাই ক্ষতিকর এই গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর মাধ্যম হিসেবে সমুদ্রের পানির কোনো বিকল্প নেই।

একবার পানি থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড আলাদা করার পর সমুদ্রের ভারসাম্য রক্ষায় ঐ পানিতে ক্ষার জাতীয় পর্দার্থ মিশিয়ে দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সি-কিওর প্রোজেক্টের মাধ্যমে আপাতত বছরে ১০০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণ করা সম্ভব হলেও প্রজেক্ট সম্প্রসারিত হলে এই মাত্রা আরও বাড়বে।

যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থ সহায়তায় 'ওয়েমাউথ সি লাইফ সেন্টারে' যাত্রা শুরু হয় এই 'সি-কিওর প্রজেক্টের'। শুরু থেকে এই প্রকল্পে বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা আরও ৪ বিশ্ববিদ্যালয়।

সেজু