পাখির চোখে দেখলে মনে হয় সবুজের আভায় ছেঁয়ে গেছে নাটোরে রাজবাড়ি। জীববৈচিত্র্যের উর্বর ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে রাজবাড়ীকে ঘিরে। মাছরাঙা পাখির ক্ষীণ দৃষ্টি, কাঠঠোকরার লাফালাফি কিংবা বন্য বেজির উঁকি ঝুঁকি এই রাজবাড়িকে ঘিরে। এছাড়া পানকৌড়ি, শামুকখোলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি সারা বছর নির্ভয়ে আশ্রয় নেয় এই গাছগুলোতে।
৫০ একরের বেশি জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই রাজবাড়ীতে রয়েছে তিনশ বছর পুরানো দুটি পরিখাসহ ৩টি পুকুর। এসব পরিখা ও পুকুর পাড়সহ পুরো রাজবাড়ি জুড়ে শোভা বৃদ্ধি করেছে বিভিন্ন জাতের বৃক্ষ। তবে বর্তমানে পরিখা ও পুকুরের পাড়ের শতবর্ষী গাছগুলো উপড়ে পড়ছে। গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ায় চলতি বছরেই মেহগনি আম এবং নারিকেলসহ বেশ কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়েছে। একের পর এক শতবর্ষী গাছ বিলিন হওয়ায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে রাজবাড়ীটি। হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র।
নাটোরের জীববৈচিত্র ভারসাম্য সুরক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি ড. হেলাল উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘এ গাছগুলো যদি নিধন থেকে মুক্তি পায় তাহলে আমাদের পশু-পাখি ও প্রকৃতির যে সৌন্দর্য তা বৃদ্ধি পাবে।’
প্রতিবছর রাজবাড়ীর পরিখা ও পুকুরগুলো লিজ দেয় স্থানীয় জেলা প্রশাসন। পাড় বাধাই না করে পুকুরে মাছ চাষ করায় পানির তোড়ে প্রতিনিয়ত মাটি সরে যাচ্ছে গাছের গোড়া থেকে। বনবিভাগের সহযোগিতা নিয়ে নদীর পাড় ও শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষার কথা জানিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন।
নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘শতবর্ষী বৃক্ষগুলো নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অংশ, সেজন্য জেলা প্রশাসক ও বন বিভাগের পক্ষ থেকে এসব বৃক্ষের রক্ষা নিশ্চিতকরণের আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’
শুধু আশ্বাস নয়, কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে রাজবাড়ীর শতবর্ষী গাছ রক্ষার পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং জীববৈচিত্র রক্ষায় ভূমিকা নেওয়ার দাবি পরিবেশ কর্মীদের।