প্রতিবছর অক্টোবরের শুরুর দিকে শীতপ্রধান দেশ থেকে জাবি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসতো। তবে গেল তিন বছরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, নানা অব্যবস্থাপনায় কমছে পাখিদের অভয়াশ্রম। তাই পরিযায়ী পাখিদের এমন জলকেলি বা ওড়াউড়ির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এখন আর সহসা দেখা যায় না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শব্দ দূষণ এবং বহিরাগত মানুষদের চলাচলের জন্য মূলত এই সমস্যা হচ্ছে। পাখি আগের মতো আর আসছে না। লেকগুলো তেমন একটা পরিষ্কার করাও হয় না। যে কারণে অতিথি পাখি আসা কমে গেছে। অতীতের বছরগুলোর তুলনায় বর্তমানে পাখির সংখ্যা খুবই নগণ্য, নেই বললেই চলে।’
আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি লেকে পাখি আসলেও এবার সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার সংলগ্ন জলাশয় ছাড়া অন্য কোন জায়গায় পাখির দেখা নেই।
বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী অরিত্র সাত্তার এখন টিভিকে বলেন, ‘শুধু যে প্রজাতিগতভাবে আমাদের পাখি কমে যাচ্ছে তা নয়। সাধারণ পাখিগুলোও এখানে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১টি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ১০ তলাবিশিষ্ট ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ, সময়মতো জলাশয় সংস্কার না করা, লেকের পাড়ে জনসমাগম এবং কোলাহল ক্যাম্পাসকে পাখির বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ‘বিগত ৫ বছরে আমাদের অপরিকল্পিত উন্নয়ন, চলাচল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাসীনতা অতিথি পাখির না আসার কারণ।’
পাখিদের এই অনুপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ পাখিপ্রেমিরা। অভয়ারণ্য নিশ্চিতে সচেতনতামূলক নানা কাজ করছে বিভিন্ন সংগঠন।