মাঘের শুরু থেকেই হাড় কাঁপানো শীতের কবলে দেশ। মাঝে দু'একদিন অবস্থার উন্নতি হলেও ফের কমেছে তাপমাত্রা। রাজশাহী-রংপুর বিভাগসহ দেশের ২১ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে শীতের এমন তীব্রতা। আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান বলেন, 'আগামীকালও তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এবং কোন কোন অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈতপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।'
আগামী ২৪ ও ২৫ তারিখ ঢাকা বিভাগের দক্ষিণাংশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তরের জেলা নওগাঁর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। জেলাটিতে সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে জেলার সব স্কুল-মাদরাসা বন্ধ করা হয়েছে। ছুটি ঘোষণা বিভ্রাটে অনেক শিক্ষার্থীই স্কুলে এসে পড়েন ভোগান্তিতে।
কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু রাজশাহীর জনপদ। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকায় রোববার ও সোমবার থেকে রাজশাহী জেলার সব স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। সেই ধারাবাহিকতায় আজও(২২ জানুয়ারি) বন্ধ রয়েছে স্কুল।
বগুড়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা নামায় স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দুদিন ধরে কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত উত্তরের আরেক জেলা নাটোর। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি বিরাজ করলেও হিমেল হাওয়া বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতা। চরম ভোগান্তিতে শ্রমজীবীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে রাতে নির্দেশনা দেয়ায় অনেক শিক্ষার্থী জানতে পারেনি স্কুল বন্ধের ঘোষণা। তাই সকালে শীত উপেক্ষা করে স্কুলে এসে- ফিরে যেতে হয় তাদের। এদিকে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলা থাকায় তীব্র শীতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ঘোষনা আসে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলেই বন্ধ হবে সে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি চুয়াডাঙ্গার কোনও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আর নির্দেশনা না থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চলছে আগের নিয়মেই।
শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়ে শ্রম বিক্রির হাটে উপস্থিত হলেও কাজ মিলছে না ময়মনসিংহের শ্রমিকদের। ঠান্ডার কারণে হাটে গেরস্থ কম আসায় কাজ না পাওয়ায় সারাদিন বেকার বসে থাকতে হবে শ্রমিকদের।
অন্যদিকে তীব্র শীতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। কৃষি শ্রমিকের আয় কমে গেছে একেবারেই। পাশাপাশি বাড়ছে ফসল উৎপাদন খরচ।