১৮ বছর পর বেরোবিতে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের হাওয়া, উদ্যোগে অনড় উপাচার্য

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় | ছবি: সংগৃহীত
0

১৮ বছর পর প্রথমবার রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বইছে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের হাওয়া। তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের বিধি সংযুক্তির পর তা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আরও পদ সৃষ্টিসহ বিধি সংশোধনের দাবি একপক্ষের। তবে তাদের এই অবস্থান নেয়াকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা মনে করছেন আরেকপক্ষ। এমন অবস্থায় এ বছরেই নির্বাচনের চেষ্টায় অনড় উপাচার্য।

প্রতিষ্ঠার দেড়যুগে নানা ইস্যুতে আলোচনা সমালোচনা পিছু ছাড়েনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি কর্মচারীদের আন্দোলনে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হওয়া ছিলো নিত্য ঘটনা। তবে জুলাই বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ৭৫ একরের এই ক্যাম্পাস আলোচিত হয় জাতীয়ভাবে।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও আবাসন সংকট, গবেষণার অপ্রতুলতা, পরিবহন সমস্যা থাকলেও শিক্ষার্থীরা সোচ্চার ছিলো কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের দাবিতে। আন্দোলন, মিছিল, স্মারকলিপির কর্মসূচি ঠেকে আমরণ অনশনে। অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন এখন টক অব দ্য টাউন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের বিধি সংযুক্তির পর দ্বিধা-বিভক্তি দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পক্ষে। ব্রাকসু'র ১৩টি পদে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত পদ রাখা হয়নি এমন অভিযোগ তুলে বিধি সংশোধনের দাবি তুলেছে একটি পক্ষ। একই সঙ্গে উপাচার্য ও ট্রেজারার পদ ছাড়া বাকি সব পদের বিপরীতে অনাস্থা প্রস্তাবের যে বিধান সংযুক্ত হয়েছে তা নিয়েও আপত্তি শিক্ষার্থীদের।

আরও পড়ুন:

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিনিধি কম থাকলে শিক্ষকদের আধিপত্য বেড়ে যাবে। নিজেদের স্বার্থে তারা এ পদগুলো কমিয়ে আনতে চাচ্ছে। কিছু মৌলিক পদ যেগুলা বাদ গেছে তা যুক্ত করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

তবে এ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল, এমন একাধিক পক্ষের দাবি, সংশোধনের আড়ালে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চলছে। ব্রাকসু নির্বাচনের বিধান সংশোধনের জন্য পাঠানো হলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ভোট আয়োজন সম্ভব হবে না বলেও মনে করছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভিন্ন মহল বিভিন্নভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত৷ সম্প্রতি আমরা দেখেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়েছে। এটি রাকসুকে বিলম্বিত করার একটি চেষ্টা হতে পারে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১৫তম সিন্ডিকেট সভায় ছয় সদস্যের যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে সে কমিশনের প্রধান একদিনের ব্যবধানে পাঠিয়েছেন পদত্যাগপত্র। যদিও তা ব্রাকসু নির্বাচন আয়োজনে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন বেরোবির উপাচার্য।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকত আলী বলেন, বর্তমানে তো এর বিকল্প আমার কাছে নাই। সংশোধনের বিষয়টা এখন নিতে গেলে এ নির্বাচন করা যাবে না। মানে দুই নৌকায় পা দেয়ার কোনো সুযোগ নাই। নির্বাচন করার পর আমাদের সংস্কারে যাইতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমরা ঠিক করে দিয়েছি। তারা অতি শীঘ্রই রোডম্যাপ ঠিক করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।

উত্তরের সবচেয়ে বড় এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের ২২ বিভাগে পড়াশোনা করছেন প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী। অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাজেট ঘাটতি থাকায় একপ্রকার ঢিমেতালে চলা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট সমাধানের পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

ইএ