গেল শিক্ষাবর্ষের মতো এবারও পাঠ্যবইয়ের মান নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। কাগজের পুরুত্ব ও উজ্জ্বলতায় মানা হয়নি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নির্দেশনা।
প্রথমেই বইগুলোর উজ্জ্বলতা মেপে দেখার চেষ্টা করা হয়। যেখানে এনসিটিবির বেঁধে দেয়া উজ্জ্বলতা ৮০ শতাংশের জায়গায় ঢাকার ভেতরের প্রাথমিকের বইয়ের কাগজের উজ্জ্বলতা ৬০-৬৫ শতাংশ আর ঠাকুরগাঁওয়ে সরবরাহ করা বেশিরভাগ বইয়ের উজ্জ্বলতা ৫৫ শতাংশের নিচে। একইভাবে বইয়ের কাগজের জিএসএম নির্ধারিত ৮০ গ্রামের জায়গায় বেশিরভাগ বইয়েই ৬০-৭০ গ্রাম দেখা যায়।
বইয়ের মান পরীক্ষা করা হয়। ছবি: এখন টিভি
এমন নিম্নমানের কাগজের বই, বইয়ের লেখা, ছবি আর ছাপার অস্পষ্টতায় চোখ ছানাবড়া হবে যে কারো। চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সাজেদ আবদুল খালেক বলেন, এতে শিশুদের চোখে বাড়তি চাপ যেমন পড়বে তেমন দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিও হবে।
প্রভাবশালী একটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে মানহীন বই সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
এনসিটিবি'র মন্তব্য জানতে চাইলে সময়মতো এবং মানসম্মত বই দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা এবং কালো তালিকাভুক্ত করার পুরনো ঘোষণা দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।
তবে অনেক মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের দাবি, এবার যে অতি নিম্ন দরের টেন্ডার দেয়া হয়েছে তাতে অধিক মুনাফা লাভের জন্য এর চেয়ে ভালো বই প্রস্তুত করা সম্ভব নয়। আর এনসিটিবির পরিকল্পনা, এরপর থেকে প্রাক্কলিত দরের ১০ শতাংশের নিচে দর গ্রহণ না করার। এছাড়া বইয়ের উজ্জ্বলতা ৮০ শতাংশের বেশি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এবার প্রাথমিকের বই আগেভাগে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছালেও মাধ্যমিকের সব বই সময়মতো পৌঁছেনি সব জায়গায়। অনেক জায়গায় জানুয়ারির শেষ দিকে পৌঁছালেও কিছু স্কুলে বাকি রয়েছে।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এক তারিখে মোট ৭টি বই পেয়েছিলাম। দুই-তিন সপ্তাহ পর বাকি বইগুলো পেয়েছি। আর বিজ্ঞান বই পাওয়ার ক্ষেত্রে একটু গ্যাপ হয়েছে।’
এ বছর তিন কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি বই বিতরণের লক্ষ্য ছিল সরকারের। তবে শেষ মুহূর্তে আরও ৩ লাখ বইয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে এখনও ছাপার কাজ চলছে।