সদ্য উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে বগুড়ার সাজিদ আহমেদ। স্বপ্ন বুনতে এখন তার ঠিকানা রাজধানী ঢাকা। শুধুমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেতে সীমাহীন পরিশ্রম সাজিদের। তিনি বলেন, 'আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। এটাই আমার মূল লক্ষ্য।'
উচ্চ মাধ্যমিকের পরে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে মেডিকেলে, প্রকৌশলে কিংবা নামী কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার। তবে ভর্তি যুদ্ধে উত্তীর্ণ হতে যেমন কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তেমনি প্রস্তুতির জন্য কোচিং করা, হোস্টেলে থাকা ও খাওয়াসহ নানান আয়োজনে গুণতে হয় বাড়তি খরচ।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানায়, গত বছরের ৮ হাজার টাকার হোস্টেল ব্যয় এখন ১৪ হাজার। দুটি কোচিং মিলিয়ে তাদের খরচ হচ্ছে প্রায় এক লাখ টাকা।
এইচএসসি'র ফলাফল ঘোষণার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছেন বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে। আর সবচেয়ে ভালো প্রস্তুতির জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকায় শুধুমাত্র কোচিং করতে এসেছেন অনেক শিক্ষার্থী। আর সে কারণে এখন সারাদেশে রমরমা কোচিং বাণিজ্য।
তবে এই কোচিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন মূলত উচ্চমাধ্যমিকের বই থেকেই করা হয়, যে বইগুলো তাদের পড়া আছে।
ভর্তি কার্যক্রমের জটিলতা কমাতে চলতি বছরের এপ্রিলে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের জন্য ইউজিসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। তবে এই বছরের জন্য এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইউজিসি। তারা বলছে, পরবর্তীতে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি গঠনের মাধ্যমে একক ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।
ভোগান্তি কমাতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আলাদা একটি গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিচ্ছে এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদা গুচ্ছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো করে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে। নতুন করে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়।
দুর্ভোগ কমাতে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ এন আই খান। তিনি বলেন, 'বর্তমান ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভোগান্তি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের। প্রয়োজনে অনলাইনেও নেয়া যেতে পারে ভর্তি পরীক্ষা।'