গাজা লেবানন ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড়সড় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। চলতি মাসের শুরুতে তেহরানের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে যেকোনো সময় ইরানকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে ইসরাইল, এমন শঙ্কা এখন তুঙ্গে।
তেহরানকে টার্গেট করে তেল আবিবের সম্ভাব্য হামলায় যে যুক্তরাষ্ট্রের সায় আছে তারও আভাস মিলছে। কারণ ইতোমধ্যেই তেহরানের জ্বালানি তেল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
বিশেষ করে, যে-সব কোম্পানি ইরানের তেল ব্যবসায় সঙ্গে যুক্ত সেসব প্রতিষ্ঠানের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা কিংবা তেল খাতের ওপর ইসরাইল হামলা চালাক, যুক্তরাষ্ট্র তা চায়না বলে দাবি ওয়াশিংটনের।
এদিকে ইরানও বসে নেই। তেল আবিবকে প্রতিহত করতে সৌদি আরব, কাতারসহ একের পর এক উপসাগরীয় দেশ সফরও করছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইসরাইল যাতে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্রদের সহায়তা না পায় সেটি নিশ্চিত করতেই এমন তৎপরতা তেহরানের।
এরই মধ্যে ইরানে হামলায় তেলআবিবকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে বিবৃতি দিয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার। পাশাপাশি তেহরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে সম্ভাব্য ইসরাইলি হামলা ঠেকাতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো।
এ অবস্থায় ইরানের কূটনৈতিক তৎপরতা অনেকটাই সফল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি ইসরাইল যেমন আক্রমণ চালাতে মরিয়া, ঠিক তেমনি হামলা মোকাবিলায় সব দিক থেকে ইরানও প্রস্তুত বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। শুক্রবার তুর্কমেনিস্তানে হওয়া বৈঠকে ইসরাইলের সাথে ইরানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার বিষয়েও কথা হয় দুই নেতার। এসময় নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার করেন তারা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। এখন আমাদের বর্তমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইরানের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় আমরা সবসময় অগ্রাধিকার দেবো।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিসরে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাবো। বৈশ্বিক নানান পরিস্থিতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যথেষ্ট এক। আমরা একে অন্যের সমৃদ্ধিতে কাজ করবো।’
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরান-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা পশ্চিমা বিশ্বকে নতুনভাবে শঙ্কিত করছে। তেল আবিবকে প্রতিহত করতে তেহরানকে মস্কো কোনো প্রযুক্তি সহায়তা দেয় কি-না তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে এতোদিন রাশিয়াকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আছে ইরানের কাঁধে।