পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া মসলাজাতীয় ফসল উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। এরমধ্যে রাঙামাটির বিস্তীর্ণ জমিতে প্রচুর হলুদের আবাদ হয়। সনাতন পদ্ধতিতে জুম চাষিরা সাথী ফসল হিসাবে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন হলুদের।
চৈত্র-বৈশাখ মাসে লাগানো হলুদ থেকে ১০ মাসেই পাওয়া যায় ফলন। উৎপাদন খরচ কম, স্বল্প পরিশ্রমে লাভও বেশি। মৌসুমে সাধারণত মণ প্রতি ৩ হাজার ২শ' থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এবার মৌসুমের শেষ দিকে রাঙামাটির বাজারে দাম বেড়েছে শুকনো হলুদের। গত বছরের চেয়ে দর এবার দ্বিগুণ। মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকায়। আর খুচরা বাজারে ৩শ' টাকা কেজি।
চাষিদের একজন বলেন, '৯ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দাম থাকলে কৃষক লাভবান হবে। গত বছর থেকে এই বছর ডাবল দামে বিক্রি হচ্ছে।'
রঙ, স্বাদ, সুগন্ধির কারণে পাহাড়ে উৎপাদিত হলুদের চাহিদা দেশজুড়ে। এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ সারা দেশে সরবরাহ হচ্ছে মসলা জাতীয় এ পণ্যটি। ডলার সংকটে আমদানি কমায় দাম বেড়েছে বলছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'এই এখানকার হলুদের মান অনেক ভালো। এই কারণে রাঙামাটি হলুদ কিনতে আসি।'
রাঙামাটির পাহাড়ে শিলং, পাবনা ও দেশি জাতের হলুদের চাষাবাদ হয় বেশি। তবে ভালো মানের হলুদ চাষের পরামর্শ দেয় কৃষি অফিস।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'এবছর ২ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হয়েছে। এবার আমরা ৭ হাজর ৬শ’ ২৫ মেট্রিকটন হলুদ পেয়েছি। প্রতি কেজি হলুদ পাইকারি মূল্য ২শ’ ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।'
চলতি বছর রাঙামাটি জেলায় সাড়ে ৭ হাজার টন হলুদ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২শ' কোটি টাকা।
পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি পতিত জমিতে বিপুল সম্ভবানাময় মসলাজাতীয় ফসল এই হলুদের চাষ বাড়ানো গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে। সাশ্রয় হবে দেশীয় অর্থের। এতে স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিও হবে সমৃদ্ধ। এজন্য সরকারি বেসরকারি বিশেষায়িত পরিকল্পনা নেয়ার দাবি এ খাত সংশ্লিষ্টদের।