কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
অর্থনীতি
0

ফেনীতে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে কুলের আবাদ

ফেনীতে বাণিজ্যিকভাবে কুলের আবাদ বাড়ছে। বলসুন্দরি, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরি ও টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষের আওতায় যুক্ত হচ্ছে নতুন জমি। তাই ভরা মৌসুমে কাঁচা-পাকা কুলে ভরে উঠেছে প্রতিটি বাগান। কম সময়ে লাভজনক হওয়ায় চাষে তরুণরা ঝুঁকছেন।

শহরতলীর আমিন বাজার এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল, জাহিদ ও রনি। স্থানীয় তিন যুবক মিলে জান্নাত এগ্রো নামে একটি কুলের বাগান করেছেন। কৃষি প্রকল্পের ৬ একর জমির বাগানে ৭ শতাধিক কুল গাছ রয়েছে। গতবছর যেখান থেকে বিক্রি হয় সাড়ে তিন লাখ টাকার ফল। চলতি মৌসুমে তাদের ১২ লাখ টাকার বিক্রির আশা।

এই উদ্যোক্তারা বলেন, 'গত বছর আমরা তিন টনের মত ফলন পেয়েছি। এবছর আমাদের ৭০০ গাছ আছে। আমরা আশা করছি প্রত্যেকটা গাছে ২০ থেকে ৪০ কেজির মত ফল আছে। ফলটার পরিচর্যা খুব কম এবং ফলনটা খুব তাড়াতাড়ি আসে। গেলো বছর আমরা কুলের ভালো চাহিদা পেয়েছি। আমাদের ক্রেতাদের মধ্যে বেশিরভাগ এলাকা এবং প্রতিবেশী।'

জেলার পাহালিয়া এগ্রোতেও দশ একর জমির এক হাজারের বেশি গাছের বাগান করেছেন স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তা। বিগত বছর ১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করলেও এবার সেই লক্ষ্যমাত্রা ১৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক কুল চাষি বলেন, 'এই কুল চাষের পাশাপাশি অন্য জাতের ফসলও চাষ করা যায়। সারাবছরে কুল থেকে ভালো একটা ফলন আসে। এটা খুব লাভজনক।'

জেলার আমিন বাজার ও কালিদহের বড় দুটি বাগান ছাড়াও ফুলগাজীর আনন্দপুর, সদরের কাজীরবাগ, ছাগলনাইয়াসহ বেশ কিছু এলাকায় কুলের বাগান রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই জেলায় ৮৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। যা থেকে ৯৩৮ টন ফলন হয়। আর চলতি মৌসুমে ৯০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৮০ টন। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বাণিজ্য হবে।

কালিদহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, 'গতবছর আমরা সাড়ে ১৬ একর পতিত জমিতে উদ্বুদ্ধ করণের মাধ্যমে একটি মিশ্র ফল বাগান সৃষ্টি করেছি। গতবার ৫ হাজার ৩টি কুল লাগিয়ে ছিলাম। এবার আরও নতুন করে ২ হাজার টক-মিষ্টি কুল লাগানোর কারণে ফলন বেশি হয়েছে। আশা করছি ২৫ লাখ টাকা বিক্রি-আয় হবে।'

এদিকে স্বাদে ভালো হওয়ায় বাগান থেকেই কুল কিনতে ছুটে আসছেন দূর-দূরান্তের ক্রেতারা। যা ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলেন, 'এখানে আমরা ভালো কুলটা পাচ্ছি। বিভিন্ন ধরনের কুল রয়েছে। তাই এখান থেকে আমরা কুল নেই।'

ফেনীর মাটি কুল আবাদের জন্য ইতিবাচক। যাতে অর্থনৈতিতে আশার আলো দেখছেন কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. জগলুল হায়দার। বলেন, 'আমাদের এখানে বাগানের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে মিশ্র ফল বাগান হিসেবে অনেকে কুল চাষ করছেন। এককভাবে যারা বাগান করছেন তারা আমাদের থেকে পরামর্শ নিতে আসেন। বিশেষ করে চারা সংগ্রহ করার ব্যাপারে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকি।'

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর