চুক্তি , শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি
শিগগিরই বাংলাদেশে আসবে ভুটানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল: রাজা ওয়াংচুক
কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানীয় ও আঞ্চলিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নাময়িগেল ওয়াংচুক। বিনিয়োগের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে শিগগিরই একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

চার দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) কুড়িগ্রামে প্রস্তাবিত 'ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল' পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিতকরণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনকে অনুরোধ জানিয়েছে ভুটান রাজা।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান রাজা। সেখান থেকে সড়কপথে কুড়িগ্রাম যান। এরপর কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে তিনি বিশ্রাম নেন।

পরে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে জিটুজি-ভিত্তিক প্রস্তাবিত ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন তিনি। অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন জিগমে খেসার নাময়িগেল ওয়াংচুক। অর্থনৈতিক অঞ্চল সংলগ্ন যাতায়াত ব্যবস্থা ও পোর্ট কানেক্টিভিটি নিয়েও এ সময় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য রাজা তার সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরুর পাশাপাশি সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরিদর্শন শেষে রাজা উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হলে আবারও এ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনের আগ্রহও ব্যক্ত করেন।

স্থানীয় ও আঞ্চলিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি জানান, ভুটান থেকে এ বিষয়ে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বিনিয়োগের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে শিগগিরই বাংলাদেশে আসবে।

চলমান সফরকালে জিটুজি ভিত্তিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ভুটান সরকারের মধ্যে গত সোমবার (২৫ মার্চ) একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে উক্ত স্মারকে স্বাক্ষর করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

বুধবার (২৭ মার্চ) ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব জনাব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যানের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। ওই আলোচনায় উভয়পক্ষ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন।

পরিদর্শন শেষে বিকালে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে নিজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ভুটান রাজা। তাকে বিদায় জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, পরিচালক ডি এম আতিকুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাউথ এশিয়ার মহাপরিচালক রকিবুল হক ও চিফ অব প্রটোকল নাঈম উদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী এবং ভুটানের রাজার মধ্যকার ২০২৩ সালের ৬ মে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সাক্ষাতের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে ভুটান সরকারের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়।

এমএসআরএস