গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মাস খানেক পরই হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে আসে পোশাক শ্রমিকদের বাৎসরিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়।
শ্রম আইনে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির হার প্রতিবছর পাঁচ শতাংশের কথা উল্লেখ থাকলেও এবার ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি করেন শ্রমিকরা। যদিও শুরু থেকেই এতে সম্মতি ছিল না সরকার কিংবা মালিকপক্ষের। পরে সরকারের সাথে আলোচনার পর শ্রমিক সংগঠনগুলো ১২ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি জানায়। আর সাত শতাংশ বৃদ্ধির বিষয়ে বরাবরই সম্মতি জানিয়ে আসছিল পোশাক মালিকরা। এমন প্রেক্ষাপটে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গঠিত হয় এ খাতের শ্রমিকদের বাৎসরিক মজুরি বৃদ্ধি ও নিম্নতম মজুরি নির্ধারণে মালিক, শ্রমিকদের নিয়ে কমিটি।
আজ (সোমবার, ৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম সচিবের সভাপতিত্বে এই কমিটির পঞ্চম সভা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় পোশাক শ্রমিকদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট নয় শতাংশ করার। যা চলতি মাস থেকেই কার্যকর হবে বলে জানান শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, 'বিদ্যমান শতকরা পাঁচভাগ বেতন বৃদ্ধির সাথে আরও শতকরা চারভাগ যুক্ত করে সর্বমোট নয়ভাগ বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির সুপারিশ করা হলো। নিম্নতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত বাৎসরিক ইনকাম অর্থাৎ শতকরা পাঁচভাগ বিদ্যমান থাকবে। কমিটি কর্তৃক বাৎসরিক ইনকাম শতকরা চারভাগ বৃদ্ধি ১ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে কার্যকর হবে। যা জানুয়ারি মাসের প্রদীয় বেতনের সাথে প্রদান করতে হবে।'
দেশের পোশাক খাত ঘিরে দেশি-বিদেশি চক্র ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও জানান, পর্যায়ক্রমে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশের গার্মেন্টসকে টেনে নেয়ার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তারমধ্যে আমাদের অনেক শ্রমিক ভাইরা আছেন যারা হয়তো না বুঝেই কাজটা করছেন। দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষাপট ঠিক আছে কিন্তু এই যে অস্থিতিশীলতা করাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে কারণ আমাদের গার্মেন্টস না থাকলে শ্রমিক ভাইদেরও আর কর্মসংস্থান হবে না। এটার ক্ষতি হলে আমরা সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।'
বৈঠকে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সম্মতিতে সবশেষ নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ইনক্রিমেন্টের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও জানান এই উপদেষ্টা। দ্রুতই পোশাক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরবে বলেও মনে করেন তিনি।