নিত্যসঙ্গী গামছা। যার প্রয়োজন এখনও অপরিহার্য। মাঠেঘাটে বাজারে যেকোনো জায়গায় গেলে কাঁধে থাকে এই সুতি কাপড়। আর ঐতিহ্যগত দিক থেকে সিরাজগঞ্জের গামছার খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও।
সিরাজগঞ্জের পাঁচলিয়া, নলকা, পাইকোশাসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হয় বাহারি রকমের গামছা। তারপর সেই গামছা হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যান তাঁতিরা। এখানকার গামছার মান ভালো হওয়ার পাশাপাশি দাম কম হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে দেশব্যাপী।
সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার বসে এই গামছার হাট। ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলা এই হাট মুখর থাকে ক্রেতা বিক্রেতায়। ৪ পিচে ধরা হয় এক থান। যা প্রকারভেদে ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৭শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। জেলার বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় যাচ্ছে এখানকার গামছা।
তবে গামছা তৈরির উপকরণের মূল্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি এবং রং সুতার বাজারের সিন্ডিকেটের কারণে আগের মতো লাভবান হতে পারছেন না তাঁতিরা।
তাঁত বোর্ডের এই কর্মকর্তা বলছেন, সিরাজগঞ্জের গামছাকে জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থা মনিটরিংসহ তাঁতিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জের তাঁত বোর্ডের লিয়াজু কর্মকর্তা অমিত সরকার বলেন,‘ গামছাকে আমরা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে আওতাভুক্ত করার জন্য চলতি বছরের ৩০ জুন বাংলাদেশ মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে একটি গবেষণা পত্র পাঠানো এবং প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া তাঁতের ব্যবসার প্রসারের জন্য এবং তাঁতিরা যাতে সহজেই ব্যবসা করতে পারে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড থেকে সহজ শর্তে ঋণ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা দিচ্ছে।’
সিরাজগঞ্জের শত বছরের প্রাচীন এই হাটেই প্রায় দুই থেকে তিন কোটি টাকার গামছা ও সুতা বিক্রি হয়।