শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি
0

দিনভর ট্যানারি মালিক-মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দর কষাকষি

এবারও সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয় করেনি ট্যানারি ব্যবসায়ীরা, এমনতাই অভিযোগ মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। আর না বুঝে এলাকা থেকে কাঁচা চামড়া বেশি দামে ক্রয় করাতে এমন সমস্যায় তাদেরকে পড়তে হচ্ছে বলে জানান ট্যানারি কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে চলে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ট্যানারি প্রতিনিধিদের মাঝে বাকবিতণ্ডা। এর মাঝেই কাঁচা চামড়া ক্রয় বিক্রয় চলেছে সারাদিন।

ত্যাগের মহিমায় একদিকে চলছে পশু কোরবানি, অন্যদিকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন ব্যক্তি হতে শুরু করে নানান ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

সকালে কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টের জড়ো হতে থাকেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন স্পটে দেখা গেল চির-চেনা দৃশ্য। একদিকে বেশি দামে কাঁচা চামড়া ক্রয় করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা, অন্যদিকে এই দামে কিনতে আগ্রহী নন ফড়িয়া বা ট্যানারি প্রতিনিধিরা।

বাক-বিতণ্ডার মাঝেই কেউ কেউ কম দামেই চামড়া বিক্রি করে দিয়েছেন। আরে এত আক্ষেপের শেষ নেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া ক্রয় করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের।

এই ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘উনারা বলতেছে ৫০০ টাকা করে, আমরা দাম বলছি ১২শ’ টাকা। কিন্তু তারা তা দিবে না, পাঁচ-সাতশ’ দাম বলে। এতে তো আমাদের লাভ হয় না।’

আরেকজন বলেন, ‘একেকটা চামড়া আমরা কিনছি ৬শ’-৭শ টাকায়। ওরা আমাদের বলে সাড়ে ৫শ’ টাকা।

অন্যদিকে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ার অপেক্ষায় অনেকেই। কোরবানির পশুর চামড়া অনেকেই দান করেন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। আবার চামড়া বিক্রির অর্থও দান করা হয়। তারপরও চামড়ার সঠিক মূল্য না পাওয়াতে আক্ষেপ তাদের।

এ বছর প্রতি পিস লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২শ’ টাকা। তবে লবণ ও শ্রমিকের খরচ বাদ দিয়েই কাঁচা চামড়া ক্রয় করছেন তারা এমনটাই দাবি ট্যানারি প্রতিনিধিদের।

তাদের একজন বলেন, ‘আমরা ১২শ’ টাকার ওপরে কিনবো না। লবণ লাগানো অন্যান্য খরচ মিলে ব্যয় হয় ৪শ’ টাকা। ৭শ’ হইলে আমরা নিতে পারি।’

বাৎসরিক চামড়া চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই কোরবানির ঈদে সংগ্রহ করেন আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনার দাবি ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের।

বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঢাকার চামড়া নিয়ে আসলে কোনো সমস্যা হয় না। হবেও না। কিন্তু ঢাকার বাইরের চামড়াগুলো বিভিন্ন সংগ্রহ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে একটু সমস্যা হতে পারে। সাভারের যে সিইটিপি আছে সেটা ওপরে অনেকটা নির্ভরশীল। আমরা এখনো এলডব্লিউজি (লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ) সার্টিফিকেট দিতে পারছি না শুধু এই সিইটিপির কারণে। যদিও এটা নিয়ে সরকার আন্তরিক। শিগগিরই কাজ হয়ে যাবে আশা করি। যতদিন না হবে, ততদিন আমরা পুরোপুরি কমপ্লায়েন্স দিতে পারছি না। ততদিন আমাদের এক্সপোর্ট একটু কমই থাকবে।’

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করা বেশির ভাগ কাঁচা চামড়া সরাসরি সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে পৌঁছে যাচ্ছে।

এছাড়াও পোস্তার আড়তদাররা চামড়া সংগ্রহ করে সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করবে। সাতদিন পর থেকে ঢাকার বাইরের চামড়া সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে ঢুকতে শুরু করবে।

আসু