কৃষি , মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
অর্থনীতি
0

সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষে বিঘাপ্রতি লাভ ৫৫ হাজার টাকা

৯০ দিনে বিঘাপ্রতি উৎপাদন ১শ' কেজি

দেশে রপ্তানিজাত বাগদা চিংড়ির সিংহভাগই উৎপাদন হয় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাপদাহ, ভাইরাস ও নদীর পানিতে লবণাক্ততাসহ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের অনেকেই চিংড়ি চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

তবে চাষিদের হতাশা দূর করতে জেলা মৎস্য বিভাগ বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেয়ায় সুদিন ফিরছে। 'সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট' প্রকল্পের আওতায় কালিগঞ্জ উপজেলার শিবপুর গ্রামে উন্নত সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে সফলতা মিলেছে। মাত্র ৯০ দিনে বিঘা প্রতি শত কেজির বেশি বাগদা চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে। যার গ্রেড হয়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২টি।

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলেন, মোট ২৩ জন চাষি বাগদা চাষে সফলতা পেয়েছে। এখানে যে কয়টি ঘের আছে সেগুলোতেও চাষ করবো। জমি অনুযায়ী মাছের পরিমাণ ভালো পাওয়ায় আমরা খুশি।

প্রথমবার এই গ্রামে ১৩শ' ৫ শতক জমিতে ২৩টি ঘেরে এই পদ্ধতিতে বাগদার চাষ শুরু হয়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ পড়ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রতি বিঘায় ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছেন চাষিরা। অথচ আগে একই ঘেরে সনাতন চাষে উৎপাদন ছিল অর্ধেকেরও কম।

মৎস্য চাষিরা বলেন, এভাবে মাছ পেলে আমাদের আয় আরো বাড়বে।

মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, সাতক্ষীরার ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৫৮ হাজার লবণ পানির ঘেরে বাগদার চাষ হয়। যার অধিকাংশ ঘেরেই সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। তবে, এবারই প্রথম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সনাতন পদ্ধতিতে বাগদা চাষে সফলতা এসেছে।

সাতক্ষীরার শিবপুর বাগদা চাষি ক্লাস্টারের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন মণ্ডল জানান, 'এই পদ্ধতিতে এত টাকার মাছ পাওয়া স্বপ্নের মতো। এক সাথে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ক্যাশ পাওয়া দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।'

কালিগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, 'এক লাখ টাকা খরচ করে তিন লাখ টাকা লাভ মাত্র ৯৩ দিনে এটা বিস্ময়কর। চাষিরা সঠিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে পারলে আরও লাভবান হবে।'

চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ হাজার টন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। এরইমধ্যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।