আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

দুই বছর পর মিয়ানমারে থেকে ১৯ টন চাল এলো টেকনাফ স্থলবন্দরে

মিয়ানমারে মংডু শহর থেকে প্রায় দুই বছর পরে প্রথম চালানে ১৯ টন আতব চাল ভর্তি একটি ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে এসে পৌঁছেছে। আজ (মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর) বিকেলের দিকে ট্রলারটি টেকনাফ স্থলবন্দরে আসে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোট টেকনাফ লিমিটেডের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, '২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মেসার্স নিউ বড় বাজার শপিংমল ২৩৭ টন চাল আমদানি করেছিল। এরপর মিয়ানমার থেকে আর কোনো ধরনের চাল আমদানি হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ২ বছর পরে মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের নামে একটি ট্রলারে করে চাল ভর্তি ট্রলার স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।'

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকার শওকত আলী চৌধুরী বলেন, 'মোহাম্মদ সেলিম নামে একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ১৯ টন চাল নিয়ে এসেছেন। তবে খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ১০২ জন ব্যবসায়ী অনুমতির বৈধ কাগজপত্র জটিলতা থাকায় এখনই চালগুলো সরবরাহ করা যাচ্ছে না।'

স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) চলমান যুদ্ধের পর টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। সীমান্ত বাণিজ্যের আওতায় মংডু শহর, আকিয়াব ও ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে হিমায়িত মাছ, বিভিন্ন প্রকারের কাঠ, শুঁটকি, সুপারি, নারকেল, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য থেমে থেমে আমদানি হয়ে আসছিল।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি মংডু শহর থেকে পণ্য আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর ইয়াঙ্গুন বন্দর দিয়ে প্রতি মাসে ৬-৮টি করে পণ্যবাহী ট্রলার আসছিল। অথচ যুদ্ধের আগে প্রতি সপ্তাহে ৮-১৫টি বেশি ট্রলার টেকনাফে আসত। মংডু শহর আরাকান আর্মি দখলে নেওয়ার পর নাফ নদীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনটি ট্রলার মিয়ানমারের ফিরে যেতে না পেরে টেকনাফ স্থলবন্দর ও নাফ নদীতে নোঙর করে রয়েছে।

স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, 'মিয়ানমার থেকে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চাল কেনা হয়েছে ২ হাজার ৩০০টাকা। পরিবহন, শ্রমিক ও বন্দর খরচসহ আরও ১০০ টাকা খরচ গুনতে হচ্ছে। চালগুলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাঠানোর কথা রয়েছে।সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া গেলে আরও চাল আনা হবে।'

স্থল বন্দরের শ্রমিক মাঝি সামছু বলেন, 'মিয়ানমারের যুদ্ধের পর থেকে আমদানি রপ্তানি থমকে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন শ্রমিকেরা। সরকার চাইলে সীমান্ত বাণিজ্য ত্বরান্বিত করতে পারে।'

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা বি এম আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, মংডু শহর থেকে ১৯ টন চাল নিয়ে একটি ট্রলার স্থল বন্দরের জেটিতে নোঙর করেছে। আইজিএম জমা দিলে পণ্য খালাস পাশাপাশি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএ