আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

চট্টগ্রাম বন্দর: ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় শিপিং ডিও পেতে বিলম্ব

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি ফিরেছে। ব্যবসায়ীরা যেন দ্রুত আমদানি রপ্তানি চালানের শুল্কায়ন ও পণ্য ডেলিভারি নিতে পারেন এজন্য কমর্কর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। যদিও ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় শিপিং ডেলিভারি অর্ডার বা ডিও পেতে দেরি হচ্ছে। ‍ডেলিভারির চাপ থাকায় পণ্য পরিবহনের ভাড়া বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে গড়ে ৭ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার কনটেইনার উঠানামা করে। আর ডেলিভারি হয় সাড়ে ৩ থেকে চার হাজার কনটেইনার।

টানা চারদিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারণে বন্দরে কনটেইনার স্তুপ জমে, ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। বেড়ে যায় জাহাজের অবস্থানকাল। ইন্টারনেট বন্ধে সার্ভার অচল হওয়ায় আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে যে সংকট তৈরি হয়েছিল তা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এখন নিজ অফিসে বসেই অনলাইনে আমদানি রপ্তানি চালানের নথি দাখিল করতে পারছেন সিএন্ডএফ এজেন্টরা। পুরোদমে চলছে পণ্য ডেলিভারি ও কনটেইনার উঠানামা।

তবে সার্ভার অচল হওয়ার পরে ম্যানুয়ালি যেসব জাহাজের নিবন্ধন ও কনটেইনার ইয়ার্ডে নামানো হয়েছে সেগুলো খুঁজে পেতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় শিপিং ডেলিভারি অর্ডার পেতেও দেরি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানি রিগ্যান বলেন, ‘আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম আবার চালু হয়েছে। তবে শিপিং এজেন্টগুলোর গাফিলতির কারণে ডেলিভারি অর্ডার দিতে দেরি করছে। এই কারণে অনেক পণ্য ডেলিভারি নিতে সমস্যা হচ্ছে।’

এছাড়া পণ্য পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়া এবং নির্ধারিত সময়ে পণ্য ডেলিভারি নিতে না পারায় খরচ বেড়েছে আমদানি ও রপ্তানিকারকের। ক্ষতি কমাতে পোর্ট ও শিপিং চার্জ মওকুফ চান সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘ঢাকা-চিটাগাংয়ে পরিবহন ভাড়া অত্যন্ত বেড়ে গেছে। যে কারণে আমদানিকারকরা ভুগছেন। এটার ব্যাপারে সরকার যদি কোনো উদ্যোগ নেয় তাহলে ভালো হয়।’

আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বন্দরের কনটেইনার জট কেটে যাবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মো ওমর ফারুক বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার মোট ৬ হাজার বকেয়া ডেলিভারি দেয়া হয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ৫-৭ দিনের মধ্যেই আরো বকেয়া কনটেইনার ডেলিভারি দেয়া হবে।’

৫৪ হাজার টিইইউএস ধারণক্ষমতার বিপরীতে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ৪১ হাজার টিইউএস কনটেইনার আছে। বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য নামার পরে চারদিন কোনো চার্জ বা ভাড়া দিতে হয় না। এর পর থেকে প্রথম সাত দিন কনটেইনার প্রতি ৬ ডলার ভাড়া দিতে হয়। পরবর্তী সাত দিনে ১২ ডলার, এর পরে যতদিন কনটেইনার থাকবে গুনতে হবে ২৪ ডলার করে। সেই সঙ্গে গুনতে হয় শিপিং ডেমারেজ।