আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি

পিছিয়ে যাচ্ছে পতেঙ্গা টার্মিনালের কার্যক্রম

হাজেরা শিউলি
চট্টগ্রাম

আবারও পিছিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম। যদিও টার্মিনাল পরিচালনার প্রাথমিক যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে ইয়ার্ড প্রাঙ্গণে স্থাপনের কাজও শুরু হয়েছে। তবে এখনও টার্মিনাল পরিচালনায় আনুষঙ্গিক ছাড়পত্র পায়নি বিদেশি অপারেটর সৌদি আরবের রেড সি গেইটওয়ে। সেই সঙ্গে কাস্টম হাউসের সার্ভার এবং বন্দরের পণ্য ডেলিভারি সিস্টেমের সাথেও অনলাইন সংযোগ স্থাপিত হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য গেল বছরের ৬ ডিসেম্বর ২২ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় সৌদি আরবের রেডসি গেইটওয়ে। চুক্তি অনুযায়ী ৫ মাসের মধ্যেই অর্থাৎ চলতি এপ্রিলেই পিসিটির কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল।

এরইমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছেছে। টার্মিনালে কিছু কিছু যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজও শেষ। নিয়োগ দেয়া হয়েছে জনবলও। তবে টার্মিনালটি চালুর সামগ্রিক প্রস্ততি শেষ করতে পারেনি বিদেশি অপারেটর। বন্দর ও কাস্টম হাউসের সিস্টেমের সাথে টার্মিনাল অপারেশনের আন্তঃসংযোগ হয়নি এখনও।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, টার্মিনাল পরিচালনার জন্য এনবিআরের বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্স, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ ছাড়পত্রসহ ২২ থেকে ২৫টি দপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হয়। এসব ছাড়পত্র পেতে দেরি হওয়ায় যথাসময় চালু হয়নি পিসিটি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহায়েল বলেন, 'সৌদির রেড সি গেইটওয়ে আন্তর্জাতিক মানের একটা অপারেটর। তাদের চমৎকার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। এই নিয়ে আমাদের একটা কমিটিও আছে। দুইপক্ষ মিলে কাজ করে যাচ্ছে।'

সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করতে আরও তিন মাস সময় বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যদিও কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, মে মাসেই কাজ শেষ করে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের অপারেশন শুরু হবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, 'একটা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ শুরু করতে হলে তাদের অনেকগুলো অনুমতি নিতে হয়। সে হিসেবে সবগুলো কাজ করতে তাদের কিছুটা সময় লাগছে এবং সময় বৃদ্ধির বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করি মে মাসেই চালু হবে। কারণ তাদের যন্ত্রপাতি সব চলে এসেছে।'

বন্দর চেয়ারম্যান জানান, টার্মিনাল পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ কি গ্যান্ট্রি ক্রেন আসেনি। এটি ইয়ার্ডের ধরন-আকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্ডার করে নির্মাণ করতে হয়। কি গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে পিসিটি পুরোদমে চালু হতে সময় লাগবে আরও দুই বছর। এ টার্মিনালে জাহাজ থেকে কনটেইনার নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে পাশের আরেকটি ইয়ার্ডে, পণ্য ডেলিভারি হবে সেখানেই। ফলে এ টার্মিনালে কখনও জট হবে না।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহায়েল আরও বলেন, 'পতেঙ্গা কনটেইনারে মালামাল লোড-আনলোড হবে। এ দুটো কাজ এখান থেকে হবে। আর বাকি সকল কাজ হবে তাদের ইয়ার্ড থেকে। পৃথিবীর সমস্ত পোর্ট যেভাবে অপারেশন করে চট্টগ্রাম বন্দরও সেভাবে শুরু করেছে।'

পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বন্দরের একমাত্র কনটেইনার টার্মিনাল যেটি বিদেশি অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হবে। ১২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালে তিনটি জেটিতে একসাথে তিনটি কনটেইনার জাহাজ ভিড়তে পারবে। বছরে সাড়ে চার লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম টার্মিনালটি।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর