চলতি শীত মৌসুমে প্রান্তিক ভোক্তারা যেভাবে গ্যাস সংকটে ভুগেছেন, সেই প্রেক্ষাপটে যৌক্তিকভাবেই আলোচিত হচ্ছে যে, জ্বালানির সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখাটাই সামনের দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
এমন প্রেক্ষাপটে এ সংকট নিরসনে অনেকটা আটঘাট বেঁধে নেমেছে সরকার। স্পট মার্কেট থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে এলএনজি কেনা, বিদেশি দাতা সংস্থার সঙ্গে জ্বালানি বিষয়ক ঋণচুক্তি করা সে ইঙ্গিতই বহন করে।
সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি বুধবার যে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ১৩শ' কোটি টাকার প্রস্তাবই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরের দুইটি স্পট মার্কেট থেকে ৩ দফায় ৩ কার্গো এলএনজি কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এতে প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে ৯.৭৭০ ডলার থেকে ৯.৮৪৭ ডলার পর্যন্ত। যা আগের ক্রয় প্রস্তাবের চেয়ে প্রায় ১ ডলার কম। সব মিলিয়ে নতুন বছরের প্রথমার্ধ্বে খোলাবাজার থেকে ১৩ কার্গো এলএনজি কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির কাছে প্রশ্ন ছিলো, কেন হঠাৎ করে খোলাবাজার থেকে এলএনজি কেনার দিকে ঝুঁকলো সরকার? এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'যেখানে প্রাইস কম পাওয়া যায় আমরা সেখান থেকেই নিবো। যদি আমাদের তারাতারি কিনতে না হয়, তাহলে আরও ওয়াইডার এক্সপ্লোর করতে হবে যে যেখানে দাম কম এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে যে তারা করবে।'
ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠক শেষ করে, নিজ দপ্তরে ইসলামিক সহযোগী সংস্থা, দ্য ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের সঙ্গে একটি ঋণচুক্তির অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি জানান, জ্বালানি ও গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ২.১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পাবে তার মন্ত্রণালয়। এই অর্থের ১.৬ বিলিয়ন গ্রহণ করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে।
এছাড়া ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের জন্য একটি ওয়েলহেড কম্প্রেসর কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই কম্প্রেসরটির মাধ্যমে গ্যাস ক্ষেত্রটি থেকে গ্যাস আহরণ ও উৎপাদন সহজতর হবে।