চাহিদার সঙ্গে গত দুই বছর ধরে বাড়তে থাকে ডলারের দাম। এতে সংকট দেখা দেয় ব্যাংকগুলোতে। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা হয় আমদানি এবং নির্ধারণ করে দেয়া হয় ডলার মূল্য।
এতে ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিন ১১০ টাকায় লেনদেন হয় ডলার। আর খোলা বাজারে ১১৬ টাকা থাকলেও ১১৮-১১৯ টাকায় কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দামের এই ঊর্ধ্বমূখী সময়ে চালু করা হলো ক্রলিং পেগ নামে নতুন পদ্ধতি। সেই সাথে ব্যাংকে সাত টাকা ডলারের দম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বেশি বা কমে কেনাবেচা করতে পারবে।
মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতে চাহিদা অনুযায়ী ডলার সরবরাহ বাড়ার আশা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এ পদ্ধতিতে খোলা বাজার বাধা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কাও করছে অনেকে।
ব্যাংকের দাম নির্ধারণ করে দিলেও খোলা বাজারের জন্য কোনো নির্দেশনা দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যে কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডলার লেনদেন বন্ধ দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ব্যাংকে ডলার না পেয়ে এখান থেকে ফেরত যেতে দেখা গেছে গ্রাহককে।
গ্রাহকরা বলেন, ডলার বিক্রি করার ক্ষেত্রে এখনো পূর্ববতী মূল্যই নির্ধারণ করা আছে। বাংলাদেশ বাড়ালেও ব্যবসায়ীরা এখনো বাড়ায়নি। তারা পরে বেশি দামে বিক্রি করবে। মার্কেটে ডলার কিনতে আসছি কিন্তু কেউ বিক্রি করছে না।
ব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারে অন্তত ৫ টাকা পার্থক্য দাবি করেছেন কেউ কেউ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করা হবে বলে জানান মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এস এম জামান।
তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আমাদের চাওয়া হলো ডলার এক টাকা বাড়িয়ে ক্রয় করা এবং দেড় টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা।'
দাম বাড়লেও ডলার সরবরাহ কম থাকায় এ পদ্ধতিতে খুব একটা কাজে আসবে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।
তিনি বলেন, 'আমরা রপ্তানিমুখী কোন দেশ না। আমাদের আমদানি বেশি করতে হয়। সুতরাং আমাদের বেশি অর্থ প্রদান করতে হবে। তাহলে দ্রব্যমূল্যের দাম আরও এক ধাপ বেড়ে যাবে।'
সরবরাহ না বাড়লে ডলারের দাম খুব শিগগিরই খোলা বাজারে ছাড়তে হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের শঙ্কা বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।