মুদ্রাবাজার
অর্থনীতি
0

বাড়ছে রেমিট্যান্সের প্রবাহ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে এবিবি, বাফেদা ও ডলার এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত পদক্ষেপের সুফল মিলছে।

এতে অক্টোবরে প্রায় দুই বিলিয়ন এবং চলতি মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১১৮ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে দেশে এসেছে।

ধাপে ধাপে হুন্ডি ও খোলা বাজারের‌ সঙ্গে সমন্বয় করে ডলারের দাম বৃদ্ধির ফলে এ সুফল পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি হুন্ডি ও খোলা বাজারে ডলারের দর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তবে রেমিট্যান্সে এই ইতিবাচক প্রবাহ ধরে রাখা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।

ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ডলার সংকট তৈরি হওয়া দেশের অর্থনীতির এ মুহূর্তের বড় সমস্যা। যা চলতি বছরে বড় আকার ধারণ করেছে।

এদিকে গত সেপ্টেম্বরে গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছে। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে হুন্ডি ও খোলা বাজারে ব্যাংকের থেকে ডলারের মূল্য বেশি। সেই সঙ্গে রপ্তানির প্রবৃদ্ধিও কমেছে ধারাবাহিকভাবে।

সংকট কাটিয়ে উঠতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণে সম্প্রতি দফায় দফায় বৈঠকে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকারদের সংগঠন এবিবি এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ সংগঠন বাফেদা। এসময় কেনা-বেচায় ডলারের দাম নির্ধারণ এবং রেমিট্যান্সে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেয়াসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এতেও খুব বেশি কাজ হয়নি।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আসলে হুন্ডি যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে রেট নিয়ে আমরা যতই কাজ করি তাতেও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না’।

এ অবস্থায় ফের বৈঠকে বসে ডলারের দাম পুনর্নির্ধারণ করে বাফেদা ও এবিবি। এ দাম না মানলে দেয়া হয় কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি। পাশাপাশি খোলা বাজারের জন্যও দাম ঠিক করে দিতে মানি এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েশনকে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এখানেও দেয়া হয় কঠোর হুঁশিয়ারি।

একের পর এক এমন পদক্ষেপে অক্টোবরে ঘুরে দাঁড়ায় ডলার আহরণের দ্বিতীয় বড় খাত রেমিট্যান্স। সে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে। আর চলতি নভেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে এসেছে ১১৮ কোটি ডলারের বেশি।

এ অবস্থা চলতে থাকলে চলতি মাসে ২ বিলিয়নের বেশি ডলার আসার আশা করছে ব্যাংকগুলো। তবে হুন্ডি কমিয়ে আনার ওপর যৌথ প্রচেষ্টার ওপর জোর দিচ্ছেন ব্যাংকাররা।

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং চ্যানেলটা যত সহজ করবো রেমিট্যান্স তত বাড়বে। প্রবাসিরা যাতে বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্য ব্যাংকগুলো আমরা চেষ্টা করছি। এছাড়া হুন্ডি রোধেও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

এদিকে আসছে জানুয়ারিতেই দেশে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ডলার প্রবাহের ইতিবাচক এ অবস্থা ধরে রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখতে নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান ব্যাংকারদের।

হুন্ডি কমানো ও রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারে ডলারের দামের ১/২ টাকার বেশি না রাখার পরামর্শ ব্যাংকারদের।