আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় চলতি আগস্টের প্রথম তিন দিন রেমিট্যান্স আসে সাড়ে ৯ কোটি ডলার। এর পরের তিনদিন স্থবির ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সরকার পতনের পর গত ৭ থেকে ১০ আগস্ট তিনদিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৮ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৭.৫ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে জুলাইয়ের প্রথম ২৭ দিনে রেমিট্যান্স আসে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। পরে মাসের শেষ চার দিনে তা অনেকটাই বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৯১ কোটি ডলার।
সম্প্রতি দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদ এবং সরকার পতন তরান্বিত করতে রেমিট্যান্স শাটউাউনের ঘোষণা দেয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এবং তা জোরদার করে তারা, যার প্রভাব পড়ে রেমিট্যান্সে। তবে গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা সেই ঘোষণা থেকে সরে আসে। সেই সঙ্গে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানোর অঙ্গিকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মিডিয়ার কাছে। সর্বশেষ ড. ইউনূসের নেতৃতাধীন নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন প্রবাসীরা। আর তার প্রভাব দেখা গেছে গত ৭ থেকে ১০ আগস্টের রেমিট্যান্স প্রবাহে।
চলতি আগস্টের প্রথম তিনদিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে আওয়ামী লীগ সরকার পতন ও ব্যাংকিং চ্যানেল সচল হওয়ার পর অর্থাৎ ৭-১০ আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে তার তিনগুণ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত মাসে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ফলে প্রবাসীরা কোনো রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি। এক পর্যায়ে তারা ঘোষণা দেন যে ব্যাংকিং চ্যানেলে আর রেমিট্যান্স পাঠাবেন না। এমন সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব পড়ে গতমাসের প্রবাসী আয়ে। তবে নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন ও ব্যাংকিং চ্যানেল সচল হওয়ায় আবার তারা প্রবাসী আয় দেশে পাঠাচ্ছেন। আর সেজন্য ইতিবাচক ধারা ফিরেছে অর্থনীতির বড় এই খাত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার।
দেশের ইতিহাসে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান।