গত ২ এপ্রিল সশস্ত্র গোষ্ঠী বান্দরবানের রুমা উপজেলার প্রশাসন কমপ্লেক্স ভবনে হামলা চালিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে। এসময় তারা অপহরণ করে ব্যাংকের ম্যানেজারকেও। বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র লুট, থানায় হামলা ও ব্যাংক কর্মকর্তা অপহরণের ঘটনায় পাঁচটি মামলা করে পুলিশ।
এরপর ৩ এপ্রিল বান্দরবানের থানচি সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে অস্ত্রধারী ডাকাত দলের ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য হামলা করে । উপস্থিত গ্রাহকদের জিম্মি করে সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা এবং কৃষি ব্যাংক থেকে আনুমানিক তিন লাখ টাকাসহ ১০ থেকে ১৫টি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। মুক্তিপণ দেয়ার পর গত ৫ এপ্রিল ছাড়া পান ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীন।
ঘটনার পর রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলা শাখার ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয় একদিন । পরে আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি শাখা খুলে দেওয়া হলেও রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে নিরাপত্তার কারণে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক বন্ধ রাখা হয়েছে। লেনদেন হচ্ছে শুধু সদর শাখায়।
কয়েকদিন পরেই নববর্ষ উৎসব এবং পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই বেতন ও বোনাসের টাকা তুলতে ভিড় বেড়েছে গ্রাহকদের। জোর দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যাবস্থায়ও। ব্যাংকের মূল ফটক দু'টি বন্ধ রাখা হয়েছে।
একজন গ্রাহক বলেন, 'দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তারপর টাকা উঠাতে পেরেছি। লাইনে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে।'
ভিড় থাকলেও রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং গ্রাহকরা ৪ থেকে ৫ জন ব্যাংকে প্রবেশ করছেন তাদের লেনদেন শেষ হলে লাইনে থাকা পরবর্তী ৪ বা ৫ জন গ্রাহক যাচ্ছেন লেনদেনের জন্য।
বান্দরবান সোনালী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক রাজন কান্তি দাশ বলেন, 'ট্রাঞ্জেকশনগুলো সব বান্দরবান সদর শাখা থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনটি শাখার ম্যানেজার এবং কর্মকর্তারা এখানে বসেই অফিস করছেন। গত দিনদিন হলে এখানে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত আমাদের ওই শাখাগুলোও কার্যক্রম শুরু করবে।'
বান্দরবানে যৌথ অভিযানে আটক ৫৪ জনের নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৯ জন নারী ও ৩৫ জন পুরুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৯ জন রুমা উপজেলার বেথেলপাড়ার বাসিন্দা। বাকি পাঁচজন জেলা সদর, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার বাসিন্দা। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চলবে।