ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার বদলে এটিএম বুথ ব্যবহারের অভ্যাস বেড়েছে গ্রাহকদের । যখন খুশি তখন নির্বিঘ্নে টাকা তোলা যায় বলে হাতে নগদ টাকা রাখার বদলে কার্ড পকেটে নিয়ে ঘোরাটাই এখন পছন্দের। বাড়ছে ডেভিড কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা। গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ডেবিড কার্ডধারীর সংখ্যা ৩ কোটি ছাড়িয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুযারিতে এটিএম লেনদেন ছিলো ২৯ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা, এক বছর আগে যা ছিল ১৯ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ঈদুল ফিতরের মাসে অর্থ্যাৎ এপ্রিলে এটিএম থেকে ৩৪ হাজার ৫০৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। দুই ঈদে সরকারি ছুটির সঙ্গে ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ থাকে। আর তাই টাকার প্রয়োজন মেটাতে এটিএম বুথের উপর নির্ভর করেন গ্রাহকরা। চাপ সামলাতে ঈদ বা উৎসব কেন্দ্রিক তাই বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হয় ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়ে থাকে, এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক সেবা নিশ্চিতে কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুত নিরসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহ নিশ্চিত এবং টাকা উত্তোলনের একক লেনদেনের সর্বোচ্চ পরিমাণ সমান রাখতে হবে। এছাড়া সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে প্রয়োজনে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বুথ পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়।
ঈদের ছুটিতে বিশেষ লেনদেনের জন্য ব্যাংকের কিছু শাখা ছাড়া কার্ড দিয়ে ২৪ ঘণ্টাই তোলা যাবে টাকা। কিন্তু বাড়তি চাপের কারণে বুথের সেবা পাওয়া নিয়ে থাকে শঙ্কা।
পর্যাপ্ত টাকা থাকে না বুথগুলোতে। এছাড়া নেটওয়ার্ক সমস্যা এবং কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রেও জটিলতা দেখা যায়। এমনকি গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথ থেকে চুরি, ছিনতাই এবং ডাকাতির ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি।
তবে নানা উদ্যোগের পরও কেন ঈদের ছুটিতে এটিএমের নিরাপত্তা ও এখান থেকে টাকা তুলতে সমস্যায় পড়তে হয় সে বিষয়ে জানালেন এই ব্যাংকার।
ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারপারসন ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, ‘ঈদে কিন্তু ব্যাংকারদের খুব বেশি ছুটি থাকে না। ব্যাংকগুলো যেদিন ছুটি শুরু হবে সেদিন যদি ধারণক্ষমতার পুরোটাই দিয়ে রাখেন তাহলে সমস্যা হয়তো হবে না। অনেকসময় কোনো এটিএমে বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটতে পারে। আর এ সমস্যার সমাধানে ব্যাংকগুলোকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’
ঈদের ছুটিতে বুথে নিরাপত্তা এবং টাকার সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এবং বীমা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ হিসাবে, দেশে বর্তমানে এটিএম সংখ্যা ১৩ হাজার ৫২৬টি। সেই সঙ্গে সিডিএম ও সিআরএম রয়েছে ৪ হাজার ৪৫০টি। এতে চলতি বছর জানুয়ারিতে এটিএম মেশিন থেকে উত্তোলন হয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর সিআরএম মেশিনে লেনদেন হয়েছে ১২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা।