অর্থনীতি
0

আবারও চালু হচ্ছে বন্ধ থাকা কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র

চাঁদপুর দেড়শ' মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, আগুনে মেশিনারিজের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। দ্রুত সময়ে সংস্কার শেষে ৩ মের মধ্যে গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি চালু করা হবে।

চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ ছিল দীর্ঘ দিন। গত ১৮ মার্চ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি চালু করা হয়। মাত্র ১৭ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন শেষে গত ৪ এপ্রিল জেনারেটরের বেয়ারিংয়ে অয়েল লিকেজ থেকে আগুন লাগে। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও বন্ধ করা হয় ইউনিটটি।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একজন কর্মী বলেন, 'উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানানো হয়। এবং দ্রুততম সময়ে ইমার্জেন্সি শাট ডাউনের ব্যবস্থা করা হয়। যখন আমাদের মেইনটেইন্যান্স টিম কাজ করবে তকন তারা এটাকে ক্যালকুলেট করতে পারবে যে এর ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণটা কি।'

জেলায় দিনে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মেগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় একজন বলেন, 'কাজের চাপের সময় বিদ্যুৎ না থাকলে কাজের সমস্যা হয়ে যায়। সময়মতো কাজ করতে পারি না। আবার বাসায় ছোট বাচ্চা আছে, বয়স্ক বাবা তাদের তো এই গরমে খুবই খারাপ অবস্থা। আমরা চাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকুক। কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় দাবি জানাই দ্রুত এর সমাধান করা হোক।'

কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুরি জানান, আগুনে মেশিনারিজের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। দ্রুত সময়ে সংস্কার শেষে ৩ মের মধ্যে গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি চালু হবে।

তিনি বলেন, 'মেশিন সব সেইফ অবস্থানে আছে। বেয়ারিং লিকেজের কাজ শেষ না করে এটা চালানো কখনও যুক্তি সঙ্গত না। প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো এর মধ্যেই অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ ব ২৬ তারিখে এটা আমাদের কেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে।'

১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস টারবাইন ইউনিট চালুর পাশাপাশি ৫০ মেগাওয়াটের স্টিম টারবাইন ইউনিটটিও সচল করা হচ্ছে। মে'র মাঝামাঝি চীন থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন। আগামী জুনের মাসের মধ্যে ইউনিটটিও চালুর আশা করা হচ্ছে। গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি মেরামতে খরচ হবে প্রায় ১৯ কোটি।

নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। সে সময় গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে এই কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ হয়েছে দুই দশমিক শূন্য নয় পয়সা। স্টিম টারবাইন চালু থাকলে খরচ কমে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ দাঁড়ায় এক দশমিক সাত সাত টাকা।

২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে কেন্দ্রটি। চীনা কোম্পানি চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে।

এসএস