দেশে এখন
অর্থনীতি
0

'রাজশাহীতে ১৭০ কোটি টাকার গুড়ের বাজার'

শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে রাজশাহীতে বাড়ছে খেঁজুর গুড়ের ব্যবসা। পৌষ হতাশ করলেও মাঘের শীত পুষিয়ে দিচ্ছে ব্যবসার লোকসান।

গুড় কারিগররা বলেন, 'শহরের লোকজন খাঁটি জিনিসটা খেতে চায়। একটা জিনিসের দুইবার ব্যবহার তারা পছন্দ করে না। তাই আমরা ফুয়েল পেপার ব্যবহার করছি। শীত নামার কারণে গাছে রস অনেক বেশি। গুড়ের বাজার মোটামুটি ভালোই।'

প্রতি বছর রাজশাহীতে গুড়ের উৎপাদন বাড়ছে। সপ্তাহের দুই দিন জেলার ৩টি হাটে উৎপাদিত এ গুড়ের বেচাকেনা হচ্ছে। প্রতি হাটে ২৮০০ থেকে ৩২০০ মণ গুড়ের যোগান হচ্ছে। প্রায় ৪০০ গ্রাম থেকে আনা কৃষকের গুড়, মান যাচাই করে ফরিদপুর, ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও সিলেটের পাইকাররা হাট থেকে কিনছেন। স্বাদের পার্থক্যে প্রতি কেজি গুড় পাইকারি ১৬০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গেলো বছরের চেয়ে কেজিতে যা ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি।

গুড়ের ক্রেতারা বলেন, 'রস থেকে খুব ভালো গুড় হচ্ছে। খেতেও অনেক স্বাদ। শীতে ভালো গুড়টা পাওয়া যায়।'

বিক্রেতারা বলেন, 'এখানে মূল গুড়টা পাওয়া যায়।  যেটা ভালো গুড় সেটার দাম ধরেন ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। এই গুড় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, নরায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে।'

সুমিষ্ট খেজুর রস থেকে সুস্বাদু খেজুর গুড় তৈরি হয়। যার বিপণন ব্যবস্থায় এক সময় গ্রামের হাট বাজার গুলো নির্ভরশীল ছিলো। তবে সেখানে ডিজিটাল মার্কেট বা অনলাইনে বেচাকেনা স্থান করেছে। ফলে এ অঞ্চলে বেড়েছে নতুন নতুন খেজুরের গাছ আর বাগানের সংখ্যা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, 'আমাদের চাষিরা কিন্তু নিরাপদ গুড় তৈরি করেন। যার বাজারমূল্য গত বছর ছিলো প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। এই বছর আশা করছি  ১৬০ থেকে ১৭০ কোটি টাকাতে পৌঁছাবে।'

এক সময় খেজুর গাছ ছেলা, সর সংগ্রহ, গুড়ের উৎপাদনে দেখা গেছে মধ্য ও বয়স্কদের ভিড়। এখন তরুণ-যুবকরাও এ কাজে হাত লাগিয়েছেন। তাদের উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুড়ের হাট বসেছে। রস সংগ্রহ থেকে খাঁটি গুড় উৎপাদন করে কুরিয়ারের মাধ্যমে সরাসরি পৌছে দিচ্ছেন ভোক্তার কাছে। বাজার ধারনার পরিবর্তন ঘটিয়ে অনলাইনে বেচাকেনা করে স্বচ্ছল হয়ে উঠছেন।

তরুণ উদ্যোক্তারা বলেন, 'এখন বাজার বলতে কিন্তু শুধুমাত্র হাট-বাজারগুলোকে বুঝায় না। বাজার অনেক বিস্তৃত হয়ে গেছে। অনলাইন ভিত্তিক বাজার গড়ে উঠেছে। গত বারের চেয়ে এবার দাম বেশি। আগে ছিলো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা আর এবার ১৮০ থেকে ২০০ পর্যন্ত বিক্রি করা যাচ্ছে।'

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রাজশাহীতে গেল বছর সাড়ে ১১ লাখ গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে খেঁজুর রস। এ বছর সে গাছের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ লাখে। এ থেকে উৎপাদিত গুড় নিয়মিত হাট বাজারের পাশাপাশি প্রতিদিন ১১ টন গুড় অনলাইনে অর্ডার করা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর