সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের প্রত্যন্ত এলাকা শিমুলদাড় বাজারের প্রতিটি দোকানেই এখন কম্বল সেলাইয়ের ব্যস্ততা। শিমুলদাড় ছাড়াও ছালাভরা, কুনকুনিয়াসহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকায় প্রায় ১৫টি ছোট-বড় কম্বল তৈরির কারখানা। যেখানে কাজ করছেন শিক্ষার্থীসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ। মাথাপিছু প্রতিদিন আয় করছেন এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা।
কম্বলের কারিগররা জানান, এখনে কম্বলের কাজ করে অনেক উন্নতি হচ্ছে। আমাদের প্রতিদিনই লাভ থাকে। পড়ালেখার পাশাপাশি এখানে কাজ করি। বিভিন্ন রকমের কম্বলের কাজ হয় এখানে।
পোশাক কারখানার পরিত্যক্ত টুকরো কাপড় দিয়ে এখানে শীতের কম্বল তৈরি করছেন হতদরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ। বর্তমানে এই শিল্পের সাথে জড়িত উপজেলার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ।
শিমুলদাড় বাজারে গড়ে ওঠা দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কম্বলের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বাংলা, বিশ্বাস, চায়নাসহ ১৬৬ রকমের কম্বল। ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে কম্বল পাওয়া যাচ্ছে এখানে। বাজারের ৫০ থেকে ৬০টি দোকানে প্রতিদিন কেনাবেচা হচ্ছে কোটি টাকার কম্বল।
ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা ভালো থাকায় এখানকার কম্বল যাচ্ছে ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে পাইকার কম আসায় ক্ষতির মুখে তারা।
ব্যবসা সচল রাখতে স্বল্প সুদে ঋণসহ একটি ব্যাংক স্থাপনের দাবি ব্যবসায়ীদের।
কাজিপুর মেসার্স সহী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানা জানান, 'প্রায় ৪০০ জন ব্যবসায়ী, ৩৬ থেকে ৪০ হাজার মানুষ, বিশেষ করে নারীরা এই কাজের সাথে যুক্ত।'
স্থানীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখা এই শিল্পটির প্রসারে বিভিন্ন পরিকল্পনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের।
কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী জানান, 'একটা নির্দিষ্ট জায়গায় মার্কেট করার জন্য প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে পরামর্শ দিয়েছি।'
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার বলেন, 'এ শিল্পকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার প্রচারণায় আমরা সহযোগিতা করেছি।'
প্রতি শীত মৌসুমে প্রায় শত কোটি টাকার কেনা-বেচা হয় এই কম্বল পল্লীতে।