১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টানেল চালুর কথা ছিল ২০১৭ সালে। তখন দৈনিক ১৭ হাজার গাড়ি চলাচলের লক্ষ্য দেয়া হয়েছিলো সমীক্ষা প্রতিবেদনে।
৬ বছর পর চালু হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম গাড়ি চলছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদীর তলদেশের এই সড়ক টানেল দিয়ে।
সেতু বিভাগের তথ্য বলছে, গেলো ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত টানেল দিয়ে গাড়ি চলেছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৫টি। আর রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা।
টানেল চালুর পর প্রথম শুক্রবার ৩ নভেম্বর চলাচল করে ১৪ হাজারের বেশি গাড়ি। পরদিন শনিবার ১০ হাজারের বেশি গাড়ি। প্রথম দিকে দর্শনার্থীর সংখ্যাই ছিল বেশি।
নগরবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম বিশেষ করে আনোয়ারায় কাঙ্ক্ষিত শিল্পায়ন হয়নি। বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান এখানে কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেগুলো চালু না হওয়া পর্যন্ত টানেলের পুরোপুরি সুফল মিলবে না।
পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল এখনও চালু হয়নি। এটি চালু হলে বছরে সাড়ে চার লাখ একক কন্টেইনার আসবে। এছাড়া মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চল চালু হলেও বাড়বে ব্যস্ততা। সাথে রয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। এগুলো চালু হওয়ার আগে টানেল ঘিরে সড়ক অবকাঠামো উন্নত করার তাগিদ দেন আশিক ইমরান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দেশের একমাত্র জিটুজি প্রকল্প। চায়না সরকার থেকে নেয়া ঋণের পরিমান ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা। যা টোল থেকে ২০ বছর মেয়াদে পরিশোধ করা হবে।
বর্তমানে যে হারে যানবাহন চলাচল করছে তা থেকে আদায়কৃত রাজস্ব দিয়ে টানেলের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যায় তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ টানেলের দৈনিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ বছরে ১৮ লাখ ডলার ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। আর পাঁচ বছর পর পর রেগুলার মেইনটেইন্যান্স এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ডলার। আর এ টানেল জিডিপিতে অবদান রাখবে শূণ্য দশমিক ১৬ শতাংশ। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং সড়ক অবকাঠামো দ্রুত উন্নত করা না হলে এ লক্ষ্যমাত্রা সহসাই পূরণ করা যাবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।