অন্যান্য
সংস্কৃতি ও বিনোদন
উপমহাদেশে সুরের ভুবনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী যিনি
লতা মঙ্গেশকর। নিজের কণ্ঠে মোহিত করে রেখেছিলেন পুরো বিশ্বকে। অথচ এই কণ্ঠের জন্যই একসময় বাদ পড়েছিলেন সঙ্গীত থেকে। মারাঠী গানের মাধ্যমে ১৯৪২ সালে সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু তাঁর। কৈশোরে বাবা হারানো, এই মেলোডি কুইন ভাগ্যের পরিক্রমায় হয়ে ওঠেন সঙ্গীতের দেবী।

জাদুমাখা কণ্ঠ দিয়ে সাত দশক ধরে শ্রোতাদের মাতিয়েছেন কিংবদন্তী শিল্পী লতা মঙ্গেশকর। ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৫ বছর বয়সে বাবার পরিচালনায় গীতিনাট্যে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর নাম প্রথমে ছিল হেমা। পরে সে নাম পাল্টে দেন বাবা দীননাথ। নিজের লেখা নাটকের চরিত্র লতিকা থেকে নামটি বেছে নেন তিনি। লতা পরিবারের সবচেয়ে বড় সন্তান।

ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ভালোবাসা গড়ে উঠেছিল। সরু কণ্ঠস্বরের কারণে একসময় গান থেকে বাদ পড়েন। কিন্তু হাল ছাড়েননি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে একজন পেশাদার সংগীতশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় তিনি প্রথম গান করেন ১৯৪৬ সালে। বসন্ত যুগলকরের 'আপ কি সেবা ম্যায়' সিনেমায় তার গাওয়া 'পা লাগো কর জুরি' গানটি ব্যবহৃত হয়। এর দুই বছর পর 'দিল মেরা থোরা' গানের মাধ্যমে মুম্বাইয়ে পায়ের নিচে শক্ত ভিত পান।

নওশাদ, মদন মোহন, এসডি বর্মণ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের এ আর রহমানের মতো সংগীত পরিচালকদের সঙ্গেও সমান তালে কাজ করেছেন তিনি। বলিউডের বিখ্যাত সব অভিনেত্রীদের গানের কণ্ঠস্বর হয়েছেন এই গানের কোকিল।

তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় হিন্দি গানের মধ্যে রয়েছে পেয়ার কিয়াতো ডারনা কেয়া, আজিব দাসতা হে ইয়ে, আজারে পারদেশী, হামকো হামিসে চুরালো, কাভি খুশি কাভি গাম, মেরি খাবো মে যো আয়ি গানসহ অসংখ্য বাংলা, মারাঠি ও ভিন্ন ভাষার গান।

গত বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গানের এই স্বরসতী। সঙ্গীতভুবনে তাঁর নাম জড়িয়ে থাকবে সবসময়। তিনি নেই, নশ্বর এই পৃথিবীতে তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় সব গান অমর হয়ে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

এমএসআরএস