সাহিত্য
সংস্কৃতি ও বিনোদন

বাড়ির সীমানা প্রাচীরে বুকসেলফ!

মূল বাড়ি থেকে একটু দূরে সাজানো আছে পাঠক নন্দিত সব বই। সমরেশ, বিভুতিভূষণ, জাহানারা ইমাম অথবা হুমায়ুন আহমেদ- দূর থেকে দেখে মনে হয় নন্দিত সাহিত্যিকদের বিশাল আকারের সব বই দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি। তবে কাছে গেলেই ভুল ভাঙে। বইয়ের মোড়কের আদলে পুরোটাই বাড়ির সীমানা প্রাচীর।

আনন্দধারা নামের এই বাড়িটি দূর থেকেই নজর কাড়ে সবার। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ভাণ্ডা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হকের বইয়ের প্রতি দারুণ অনুরাগ ছিল। বইপ্রেমী প্রয়াত বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর বই পড়াকে উৎসাহ দিতে ছেলে রকিব হাসান তৈরি করেন দেয়ালটি। বাড়িটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করছেন মানুষ। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝেও আগ্রহ তৈরি করেছে বাড়িটি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, 'দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এই দেয়ালটি দেখতে আসেন। এটা দেখার পর থেকে বইয়ের প্রতি অনেকের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। বই থেকে মানুষ ধীরে ধীরে দূরে সরে আসতেছে। এই উদ্যোগটা মানুষকে বইমুখী করে তুলছে।'

সীমানা প্রাচীরটি নজর কাড়ছে শিক্ষার্থীদের। ছবি: এখন টিভি

দোতলা বাড়িটি নির্মাণের পর ২০২০ সালে বইয়ের মতো করে প্রাচীর তৈরির কাজে হাত দেন রকিব। প্রথমে ইটপাথর দিয়ে বানানো কাঠামোর ওপর বসানো হয় স্টিলের পাত। যেখানে বুকসেলফের মতো করে সাঁটানো হয় বিভিন্ন বইয়ের মোড়ক। এবার এলাকাবাসি যেন বই পড়তে পারে তাই গড়ে তুলতে চান একটি পাঠাগার। রকিব হাসান বলেন, 'বর্তমান প্রজন্ম ডিজিটাল মাধ্যমের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই এখান থেকে তাদেরকে বইয়ের প্রতি ফিরিয়ে আনার জন্যই এই দেয়ালটা করা হয়েছে। এটা মানুষ গ্রহণ করছে এবং বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।'

বাড়িটির পাশে পাঠাগার তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান আজিজুল হক। বলেন, 'যখন কেউ একটা বইয়ের ছবি তুলবে তখন বাস্তবে সেই বইটাও একটু খুলে দেখবে। তখন পাঠকরা ছবি তোলার চেয়ে বই পড়ে বেশি উপকৃত হবে। বইয়ের দেয়ালের পাশে কেউ যদি পাঠাগার করতে চায়, তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।'

৩৩টি পাঠক নন্দিত কালজয়ী বইয়ের মোড়ক শোভা পাচ্ছে সীমানা প্রাচীরে। এ উদ্যোগ বইয়ের প্রতি সব শ্রেণির মানুষকে আগ্রহী করে তুলবে বলে মনে করেন পাঠকরা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর