সংস্কৃতি ও বিনোদন
0

এবারের বইমেলায় বিক্রি বেড়েছে, খুশি লেখক-প্রকাশক

অমর একুশে বইমেলায় বাজছে বিদায়ের সুর। এবারের বইমেলায় বই বিক্রি অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি হয়েছে, যার অন্যতম কারণ মেট্রোরেল।

মেলায় কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়। রঙিন আলোর দৃশ্যগুলোয় খুঁজে পাওয়া যায় হুমায়ুন আহমেদকে, পাওয়া যায় আহমেদ ছফাসহ গত হওয়া অনেক লেখককে। যেন তারা না থেকেও থেকে গেছে পুরো বইমেলাজুড়ে।

সোশ্যাল মিডিয়ার সেলেব্রেটিদের ভিড়ে এখন আর এমন বই পাওয়া হয় না, যে বইয়ে মেতে থাকবে পুরো বইমেলা। যে বই পুরনো হবে না, বেঁচে থাকবে শত বছর।

বঙ্গ বই-এর প্রকাশক আরিফুর রহমান বলেন, ‘বেশি ফর্মায় বই লিখলে, বেশি চলবে এমনই ধারণা। আর একমাসই বই বিক্রি হবে, এরপরে বই নিয়ে লেখক-প্রকাশক কারো চিন্তা নেই। এই লেখক বছর শেষে আবার একটি বই লিখবে। পরবর্তী বইমেলায় আবার একমাস বিক্রি হবে। লেখকও দায়মুক্ত হলো। এভাবেই বইমেলা চলছে।’

মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা এখন শেষ প্রান্তে। যদিও সময় বাড়িয়ে এই মেলা ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে। শেষ সময়ে এসে মেলায় লোকসমাগম বেড়েছে। সঙ্গে পাঠকদের মধ্যে বই কেনার প্রবণতাও বেড়েছে।

ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ-এর প্রকাশক আদিত্য অন্তর বলেন, ‘বই বিক্রির দিক থেকে গতবারের তুলনায় এবার অনেক ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে, মেট্রোরেলের কারণে এবার ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বেশি আসছেন।’

এক লেখক বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় এবারের বইমেলা অনেক সুন্দর। এই কারণে সুন্দর বলছি যে, মেলায় এবার পাঠক আসছেন এবং বই কিনছেন।

মেলায় পাঠকরা বই দেখছেন। ছবি: এখন টিভি

একুশে বইমেলা একটি আবেগের নাম, এই মেলার ইতিহাস স্বাধীন বাংলাদেশের মতোই প্রাচীন। তবে ১৯৮৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়। ৩২টি বইয়ের ক্ষুদ্র মেলা কালানুক্রমে বাঙালির সবচেয়ে স্বনামধন্য বইমেলায় পরিণত হয়েছে। তবে সেই বইমেলার মর্যাদা রাখা কি সম্ভব হয়েছে?

লেখক মশিউর রহমান শান্ত বলেন, ‘আমরা যারা লেখক আছি, যারা গল্প লিখি তাদের সঙ্গে পাঠকদের দেখা হলে ভীষণ ভালো লাগে। দেখা হওয়ার এই অনুভূতি সত্যিই অনেক দামি।’

এবারের মেলার সব কাজের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলা একাডেমি। তবে প্রশ্ন উঠেছে মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে। অপরিচ্ছন্ন মেলা আর অপরিকল্পিত আসন বিন্যাস নিয়ে লেখক ও পাঠকদের অভিযোগ রয়েছে

ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বলেন, ‘ছুটির দিনগুলোতে মেলায় অনেক মানুষের ভিড় হয়। কিন্তু এদিনগুলোতে মেলায় ধুলার কারণে ভালোভাবে থাকা যায় না। এই বিষয়টি বাংলা একাডেমি ম্যানেজমেন্ট করেনি। এছাড়া পর্যাপ্ত ওয়াশরুমও ছিল না, এতে করে অনেকে বিব্রত হয়েছেন।’

স্টল ও প্যাভিলিয়নের ভিড়ে এবারের মেলায় ভিন্নতা এনেছে অডিও বুকের নান্দনিক স্টল, যেখানে শব্দরা জীবন্ত। অনেক ভিড়ের মাঝেও পাঠক কম লিটল ম্যাগাজিনের স্টলগুলোতে।

বইমেলায় এখন পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ৩ হাজার ২৫৬টি। এবার বই বিক্রিও হয়েছে বেশি, তাই খুশি লেখক-প্রকাশকরা।