সংস্কৃতি ও বিনোদন
0

৭২ হাজার টন হীরের শহর জার্মানির নর্ডলিংগেন

শহরভর্তি শুধু হীরে আর হীরে! হীরের শহরও বলা হয় একে। মাত্র ৬৮ বর্গ কিলোমিটার এই শহর জুড়ে রয়েছে ৭২ হাজার টন হীরে। যেখানে চোরের হাত থেকে সরিষা দানা পরিমাণ হীরে রক্ষা করতেই কত সতর্ক থাকতে হয়! আর সেখানে ৭২ হাজার টন হীরে নিয়ে কীভাবে আছে শহরবাসী?

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। জার্মানির নর্ডলিংগেন শহরের দেয়াল আর ঘরবাড়ি জুড়ে গেঁথে আছে হীরে। কিন্তু কোথা থেকে এলো এত হীরে? ভূতত্ত্ববিদদের মতে, পুরো শহরটিই আস্ত এক হীরের খনি। এই যেমন সেখানকার একটি চার্চে মজুদ আছে প্রায় ৫ হাজার ক্যারেট হীরে।

১৫ মিলিয়ন বছর আগে বিশাল আকারের একটি উত্তপ্ত উল্কাপিণ্ড এসে পরে এখানে। যার ফলে প্রায় ১৫ মিটার গভীর এক গর্ত তৈরি হয়। বছরের পর বছর এই গর্তে থাকা কার্বন, তাপ এবং চাপের ফলে ছোট ছোট অসংখ্য প্রাকৃতিক হীরেয় পরিণত হয়।

নর্ডলিংগেন শহরটির গোড়াপত্তন হয় ৮০০ শতকে। ১৩০০ শতক থেকে শহরে বসতি গড়তে শুরু করে মানুষ। সেসময় এই শহর পাথরে পরিপূর্ণ ছিল।

পাথর কেটে কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু করেন অধিবাসীরা। পুরো শহরটি ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার লম্বা দেয়াল দিয়ে ঘেরা। মধ্যযুগে আনুমানিক ১২০০ সালে নির্মাণ করা হয় দেয়ালটি।

১৯৬০ সালের দিকে ভূতত্ত্ববিদ ইউগেন শুমেকার এবং এডওয়ার্ড চাও শহরটি পরিদর্শন করেন। তারা আবিষ্কার করেন শহরের পরতে পরতে পাথর খণ্ডের সাথে জড়িয়ে আছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হীরে। যার ওজন প্রায় ৭২ হাজার টন!

কিন্তু এই হীরে উদ্ধার করা কখনোই সম্ভব না। তাতে প্রাচীন এই শহরটিকে পুরোপুরি গুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া এই হীরের আকার এতটাই ক্ষুদ্র যে প্রায় ৯০ শতাংশ হীরে উদ্ধার করা অসম্ভব। জার্মানদের কাছে এই শহর রূপকথার শহর হিসেবেই সুপরিচিত।

এএইচ